গৌতম সাহা, কোলকাতাঃ
এক দশক ধরে পশ্চিম বঙগের প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতি অসম্মান ও অনায্য বেতন বৈষম্যের অবসান মেটাতে প্রায় দুবছর যাবৎ শান্তিপূর্ণ নানা রকম ভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে এসেছে UUPTWA নেতৃত্ত্ব ও সংগঠনের লক্ষাধিক সমর্থকগণ।গত ২৬ শে জুলাই প্রায় ১৪ দিন অামরণ অনশনের পর শিক্ষাদপ্তর থেকে গ্রেড পে বৃদ্ধির নোটিশ জারি হয়েছিল সঙগে অনৈতিক ভাবে বদলী হওয়া প্রায় ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার অনৈতিক অন্য জেলায় বদলী রদ হয়েছিল।কিন্তু  নোটিশ অনুযায়ী একমাত্র নতুন যোগদানকারী প্রাথমিক শিক্ষক ছাড়া বিরাট অংশের প্রাথমিক শিক্ষকদের কেবল মাত্র কিঞ্চিৎ গ্রেড পে বৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্ত মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কথা মতো প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন  মাদ্রাসার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের সঙগে সমতা আসেনি।অর্থ্যাৎ সেই বেতন বৈষম্য থেকেই গেল মাদ্রাসার প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙগে কারণ উপযুক্ত ও নায্য ফিটমেন্ট সহ বেতনের পে ব্যান্ড পরিবর্তন করার কোন প্রয়াস সরকারী ভাবে নেওয়া হয়নি।এমনকি পুরানো প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙগে নতুন যোগদানকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক হয়ে গেছে ফলে আবার নতুন রকম বৈষম্য ও অসম্মান দেখা দিয়েছে।এতে পশ্চিম বঙগের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ফলে সংগঠনের নেতৃত্ত্ব এনিয়ে সরব হওয়ায় শিক্ষা দপ্তরের কাছে নতুন সমস্যা তৈরী হয়েছে।


এই অসম্মান ও বৈষম্যের অবসানে UUPTWA নেতৃত্ত্ব নবান্ন থেকে বিকাশভবনে দিনের পর দিন গিয়েছেন, অাধিকারিকদের সঙগে দেখা করে উপযুক্ত তথ্য ও যুক্তি দিয়ে বোঝাতে পেরেছেন তাদের বৈষম্যের দিকগুলি।কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের উচ্চ আধিকারিকরা কোন সঠিক দিশা ও পদক্ষেপ নিতে পারেননি এবং কিছুটা নিরুপায় হয়ে নেতৃত্ত্বকে  মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙগে দেখা করার কথা বলেছেন।সেইজন্যেই UUPTWA নেতৃত্ত্ব গত ৬ ই নভেম্বর মাননীয় মন্ত্রীর সঙগে দেখা করতে যাদবপুর থেকে নাকতলা হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে এক অভিযানের ডাক দেন।এতে মাননীয় মন্ত্রী সংগঠনের ৪ জন প্রতিনিধির সঙগে দেখা করতে বাধ্য হন কিন্ত তিনি তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের বৈষম্য অবসানে কোন সদর্থক ভূমিকা নিতে অপারগ থাকেন।ফলে নেতৃত্ত্ব আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন।তারপর প্রশাসন বেশ কয়েকশো আন্দোলনকারীকে গ্রপ্তার করে লালবাজার লকআপে নিয়ে যান।পরেরদিন তাদের ছেড়ে দিলেও ১০ জন নেতৃত্ত্বকে জামিন অযোগ্য ধারায় কেস দেন,কোর্টে তাদেরকে 'হুলিগান' বলে আখ্যায়িত করেন সরকারী উকিল।পরে অবশ্য কোর্টে তাদের জামিন হয়।কিন্তু নতুন করে অসম্মান তৈরী হয় সরকারের তরফ থেকে।তারপর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে আপামোর প্রাথমিক শিক্ষককূল।বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের সম্পাদিকা মাননীয় পৃথা বিশ্বাস বিকাশ ভবনে শিক্ষা দপ্তরে উচ্চ আধিকারিকদের সঙগে সাক্ষাৎ করে অভিযোগ জানাতে গিয়ে ব্যার্থ হয়েছেন।

এদিকে প্রাথমিক স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাওয়ায় ও সামনে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হতে চলায় সংগঠনের নেতৃত্ত্ব কিছুদিনের জন্য তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখেন।ইতিমধ্যে সার্কেল স্তরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে।কিছুদিনের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা হতে চলেছে।গতকাল UUPTWA সংগঠনের সভপতি মাননীয় সন্দীপ ঘোষ সরকারী অবহেলা,অসম্মান ও অনায্য বেতনের বিরুদ্ধে আবার নতুন করে আন্দোলনের আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন।ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি সংগঠনের বৃহত্তর আন্দোলনের আগাম কর্মসূচীর বার্তা সমর্থকদের দিয়ে রাখলেন।এতে বোঝা যাচ্ছে আগামীদিনে আবার নতুন করে আন্দোলন করতে চলেছে বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সবথেকে বড় সংগঠন UUPTWA। 

আবার প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন UUPTWA নেতৃত্ত্ব নতুন করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়ায় আগামীদিনে আবার তীব্রতর শিক্ষক আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে বাংলায় যেটি প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাজ্য সরকার যদি এরমধ্যে তাদের বৈষম্য নিরসনে সঠিক ভূমিকা গ্রহণ করেন তবে তারা আন্দোলন থেকে বিরত থাকবেন বলে জানান সংগঠনের সভাপতি।

নিয়মিত আপডেট পেতে নজর রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজে -



like our facebook page for more update