গৌতম সাহা,কোলকাতাঃ গতকাল বিকালে প্রাথমিক শিক্ষকদের জনপ্রিয় সংগঠন UUPTWA এর প্রতিনিধিরা মাননীয় রাজ্যপালের শরনাপণ্ণ হলেন তাদের উপর হওয়া বঞ্চনা,অসম্মান ও ৬ নভেম্বর মহামিছিলে হওয়া শিক্ষক- শিক্ষিকা দের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ন্যায় যুক্তি তর্ক দিয়ে মোকাবিলা না করে বলপূর্বক জেলে নিয়ে যাওয়া তথা জামিনঅযোগ্য ধরায় কেসে অভিযুক্ত করে কোর্টে তোলার প্রতিবাদে জানাতে।এই প্রতিনিধিদের মধ্যো যেমন সংগঠনের শিক্ষক নেতৃত্ত্বরা ছিলেন তেমন ছিলেন বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা অাব্দুল মান্নান,সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ নেতারা।


গত ৬ই নভেম্বর লক্ষাধিক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙগে দেখা করতে ও তাদের উপর হওয়া একদশক ধরে চলে আসা অসম্মান ও বেতন বঞ্চনার বিরুদ্ধে ন্যায় চাইতে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। মহামিছিল শুরু হয় বহু আন্দোলনের আতুঁড়ঘর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নং গেট থেকে।শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল এগিয়ে চললে পুলিস বাঘাযতিন মোড়ের কাছে মিছিল আঁটকে দেয় গার্ডরেল সহ ব্যারিকেড দিয়ে সঙগে তৈরী রাখে তিনটি জলকামানের গাড়ী সহ প্রচুর পুলিসকর্মীকে।


সেখানেই বাঁধা পেয়ে রাস্তাতেই আন্দোলনকারীরা বসে পড়েন ও ২৪ ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচী ঘোষণা করেন।এরপর মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তিনজন প্রতিনিধির সঙগে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।কিন্তু সংগঠনের সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস সহ আরো দুজন প্রতিনিধির মন্ত্রীর সঙগে সাক্ষাত বিফলে যায়।তাদের বক্তব্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তার দেওয়া কথা রাখেননি কেননা তিনি ঘোষণা করে ছিলেন মাদ্রাসার প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙগে সাধারণ প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের ফারাক থাকবে না।কিন্তু সামান্য গ্রেড পে বাড়িয়ে, বেতনের স্কেল পরিবর্তন না করে তারা সেই বৈষম্যতেই থেকে গেলেন। তাই তারা ফিরে আসেন অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা করেন তবে সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় সেইজন্য রাস্তা থেকে সরে গিয়ে পার্শ্ববর্তী শিশু উদ্যানে অবস্থান করেন।সংগঠনের নেতৃত্ত্বের অভিযোগ 


প্রায় ৬০- ৭০ হাজার শিক্ষকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশাসনিক ভাবে মোকাবিলা না করতে পেরে শিশু উদ্যানের স্থানীয় শাষক দলের সিন্ডিকেট বাহিনীদের কে লেলিয়ে দেওয়া হয় অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর।

তাদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙগে অভব্য ব্যাবহার করেন,অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন এমনকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের টেনে- হিঁজরে  সেই উদ্যান থেকে বার করে দেবার চেষ্টা করেন।
পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী প্রায় ১২৪ জন আন্দোলনকারীকে জোর করে গাড়িতে তোলেন ও লালবাজার সহ যাদবপুর থানায় নিয়ে যান।পরের দিন কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া প্রায় সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।কিন্তু সকালে সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাসকে অযথা গ্রেপ্তার করেন ও আরো কয়েকজন নিরপরাধ শিক্ষককে জামিন অযোগ্য কেস দিয়ে আলিপুর কোর্টে চালান করা হয় এবং তিনজন বাঘা বাঘা পাব্লিক প্রসিকিউটার কে দিয়ে কেস মুভ করানো হয়।কেসটি কোর্টে উঠলে আন্দোলনকারীদের হুলিগান বলে আখ্যা দেওয়া হয়।কিন্তু মাননীয় বিচারপতি তাদের প্রত্যেককে জামিনে মুক্ত করেন।উপরিউক্ত সমস্ত অনৈতিক ঘটনা মাননীয় রাজ্যপালকে বললে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।



মাননীয় রাজ্যপাল প্রতিনিধিদের বক্তব্য যথেষ্ট সহানুভূতির সঙগে শোনেন এবং আগামীদিনে এই ব্যাপারে প্রশাসনের সঙগে কথা বলবেন বলে জানান।তিনি শিক্ষকদের একযুগ ধরে চলে আসা বেতন বৈষম্যের ব্যাপারে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙগে কথা বলে সমাধান করার চেষ্টা  করবেন বলে জানান।সংগঠনের প্রতিনিধিরা মাননীয় রাজ্যপালের সঙগে দেখা করে যথেষ্ট সন্তোষ প্রকাশ করেন।এখন দেখার বিষয় মাননীয় রাজ্যপালের আশ্বাস কতটা ফলপ্রসু হয় এবং শিক্ষা দপ্তর তাদের বেতন বৈষম্য থেকে মুক্তি দেন কিনা?সেটা সময়ই বলবে।




like our facebook page for more update