বিশ্বজিৎ বর্মন ,11ই নভেম্বর: স্বাধীন দেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ যিনি ছিলেন একাধারে বিখ্যাত সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সুবক্তা এবং সিংহ সাহসী স্বাধীনতা সংগ্রামী । 1888 সালের 11ই নভেম্বর সৌদি আরবের মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন ।স্বাধীন দেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তাঁর জন্মদিনটি সারাদেশে " জাতীয় শিক্ষা দিবস " হিসাবে পালন করা হয়। 

মাএ 15 বছর বয়সেই তিনি আরবী ও ফারসী ভাষায় বিশেষ দক্ষতা লাভ করেন।তিনি আধুনিক দর্শন , বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পর্কে উৎসাহী হয়ে ওঠেন।এছাড়াও তিনি ছিলেন একাধারে অনুবাদক , ধর্মীয় চিন্তাবীদ ও দূরদর্শী রাজনীতিবিদ । আবুল কালাম আজাদ 1912 খ্রি. জুন মাসে 'আল হিলাল' পত্রিকা প্রকাশ করেন । উর্দূ সাংবাদিকতার ইতিহাসে 'আল হিলাল' প্রকাশ এক যুগান্তকারী ঘটনা। তিনি সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করেন এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে সমর্থন করেন। "India Wins Freedom" বইটি আবুল কালাম আজাদের আত্মজীবনী মূলক রচনা । যেটি ভারতীয় ইতিহাসের পাতায় একটি গুরুত্বপুর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। ব্রিটিশ সরকারের হাত থেকে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মৌলানা আজাদের অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল। এই গ্রন্থে তিনি ভারত ভাগের পটভূমি সহ 1935 থেকে 1948 সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাবলীর অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ বর্ননা দিয়েছেন। 

অনেক ইতিহাসবীদদের কাছেই বইটি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি নির্ভরযোগ্য দলিল হিসাবে অনন্য স্থান দখল করে নিয়েছে। তিনি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা এবং হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির কথা প্রচার করেন । ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তিনি পাঁচ বছর কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন । যেসকল ভারতীয় মুসলিম মুসলমানদের জন্য পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবীর বিরোধীতা করেছিলেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন মৌলানা আজাদ। তিনি ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বেও ছিলেন। দেশ ভাগের অব্যবহিত আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু- মুসলিম সম্প্রীতির প্রচেষ্টা চালান । স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।তিনি" ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি" ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন স্থাপন করেন। এই মহান মনীষী 1958 সালের 22শে ফেব্রুয়ারী 69 বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। 1992 সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান 'ভারতরত্ন'(মরণোত্তর) সম্মানে  ভূষিত করা  হয়। জন্মদিনে এই মহান জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী মানুষটিকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও প্রণাম।



নিয়মিত আপডেট পেতে নজর রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজে -



like our facebook page for more update