চোখে দেখতে না পাওয়ার প্রতিবন্ধকতা যাঁকে কখনওই স্বপ্ন দেখতে বাধা দেয়নি সেই প্রাঞ্জল পাটিল দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন মহিলা আইএএস অফিসার হিসেবে সোমবার কাজে যোগ দিলেন। কেরালার তিরুবনন্তপুরমের উপ-জেলাশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি।

মাত্র ছ'বছর বয়সেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন প্রাঞ্জল। বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করেও তাঁর 'চোখ' ফেরাতে পারেননি চিকিত্সকরা। কিন্তু আইএএস হওয়ার স্বপ্ন একদিনও দেখতে ভোলেননি প্রাঞ্জল। আশাও ছাড়েননি। সেজন্যই হয়তো ইতিহাসের পাতায় নতুন করে লেখা হবে তাঁর লড়াইয়ের কথা।

ছোট্ট থেকেই প্রাঞ্জল বুঝে গিয়েছিলেন তাঁর জীবনটা আর পাঁচজন সাধারণের মতো নয়। পড়াশোনা থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে হাজার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল প্রাঞ্জলকে। তখন থেকেই প্রাঞ্জলের মধ্যে জমা হয়েছিলে এক অদ্ভুত জেদ। সবাইকে দেখিয়ে দিতে হবে যে তিনিও পারেন। চোখের দৃষ্টি না থাকলেও তিনি যে বাকিদের থেকে কোনও অংশে আলাদা নন, বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সেটাই।

শিক্ষাপর্বের শুরুতে প্রাঞ্জল ভর্তি হয়েছিলেন মরাঠি মিডিয়ামের ব্লাইন্ড স্কুল কমলা মেহতা দাদর স্কুলে। কিন্তু সেখানে সমস্যায় পড়েন তিনি। তবু লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জেদ ধরে রেখেছিলেন। পরে তাঁর পরিবার যোগাযোগ করে দৃষ্টিহীনদের জন্য সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বিশেষ শাখার সঙ্গে। জেভিয়ার্সের সহযোগিতায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে সেখানেই পড়ার সুযোগ পান প্রাঞ্জল। ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ নিয়ে জেএনইউ থেকে পরে স্নাতকোত্তরও করেন।

জগতের আলো দেখতে না পেলেও নিজের অন্তরের আলো দিয়েই বাজিমাত করেছেন প্রাঞ্জল। সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন লক্ষ্যে। দেশের প্রথম অন্ধ  মহিলা আইএএস অফিসার তিনি।