আক্ষরিক অর্থে কি এই মহা উৎসব সর্বজনীন ?
শুভাশিস দাশ
চারদিকে কাশ ফুল আর মন্ডপে মন্ডপে লক্ষ লক্ষ টাকার সাজ চলছে । কে কত বাজেটের পারদ চড়াতে পারে এর প্রতিযোগিতা চলছে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে । আমাদের আর্থ সামাজিক যে ছবি দৃশ্যমান তাতে সহজেই অনুমেয় এই পুজো শুধু বিলাসিতার । সনাতনী প্রথার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই যে কথা বলছি তা হয়তো অনেককে পীড়া দেবে কিন্তু একটু চোখ কান খুলে আমাদের চারপাশে তাকালে সেই কথার সত্যতা যে কেউ অনুধাবন করবেন এটা বলা যেতে পারে ।
আমাদের দেশের কত পার্সেন্ট মানুষ এই পুজোয় আনন্দ করতে পারে বলতে পারেন ? এই উন্নয়নশীল দেশের যে চিত্র আমরা দেখি তা অত্যন্ত হতাশা ব্যঞ্জক ।
শহরের চিত্র কিছুটা ভালো হলেও গ্রামীণ চিত্র কিন্তু আমাদের আশাহত করে ।
আজো বৈষম্য চলছে সর্বস্তরে ।
গ্রামীণ যে সব যোজনা দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ হয় তার অনেকাংশেই চলে যায় বিত্ত শালী মানুষের নাগালে ফলে দরিদ্র মানুষের যে অবস্থা তা থেকেই যায় । আসলে তেলে মাথায় তেল দিতে অভ্স্ত্য আমরা পরিবর্তনের গান করলেও পরিবর্তন আসে কি ?
পুজো মানে এক সর্বজনীনতা , সেখানে সবাই মিলেমিশে একত্রে অংশ নেবে কিন্তু বাস্তবে ?
আপনি দেখুন না অষ্টমী তে মার ভোগের বিশেষ সরা প্যাকেটিং হয়ে মন্দিরের সদর দরজা দিয়ে চলে যায় বড় ডোনার দের রাজ প্রাসাদে । সেই মন্দিরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে একটু ভোগের খিচুড়ি পেতে পথ শিশুগুলো ! দেখেছি নিজে চোখে দেখেছি পুজো কর্তা রা কেমন দুর্ব্যবহার করে ওদের সাথে পারলে মেরে তাড়িয়ে দেয় । দু একটি ভালো উদাহরণ তো আছে যাঁরা ওদের কাছে ডেকে খাওয়ায় ।
মায়ের প্রসাদ পেতেও সেই সিস্টেম ! এ পিএল , বি পি এল আর অন্তর্দয় !
দুর্গা পুজোকে ঘিরে কত মানুষের রুটি রুজি নির্ভর করে এটা যেমন সত্যি তেমনি বিগ বাজেটের পুজো গুলোর জন্য সেই এলাকা বাসীর চাঁদার জুলুম কিন্তু বড় একটা বোঝা হয়ে দাঁড়ায় ফলে আনন্দের চেয়ে তৈরি হয় একটা অস্বস্তি কর পরিস্থিতি , যা অনভিপ্রেত !
তবুও বঙ্গের এই উত্সবকে ঘিরে বঙ্গ জনের আদিখ্যেতার শেষ নেই ।
কোটি কোটি টাকা মাত্র চারদিনের জন্য খরচ !
পুজো আসে পুজো চলেও যায় ! আনন্দের দাবিদার যাঁরা তাদের কজন এই আনন্দ নিতে পারে ?
যেদিন পুজো সবার জন্য আনন্দ নিয়ে আসবে সেই দিন পুজোর সার্থকতা খুঁজে যে পাবো এটা বলার অপেক্ষা রাখে না !
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊