শরৎ
সুস্মিতা ঘোষ 

বহু দিন ধরে পুরনো পথ খুঁজি,
সেই শিউলি মাখা শর‍তের বুকে 
এক চিলতে রোদ্দুর খুঁজি।
সবজে দিঘির কাদা জলে
শালুক সাজা ভোর খুঁজি
কাশফুল যখন প্রৌঢ়ত্ব মেখে নদীর কোনো দুলু দুলু
সেই প্রৌঢ়ত্বের অবকাশে আগমনীর আনন্দ খুঁজি।
ঝরা হলুদ রঙা সজনে পাতা যখন মেঠো পথকে সোহাগে ভরে
বা দূর্বার ডগায় এক চিলতে শিশির 
দলিয়ে চলে যাওয়া মেয়ের কাদা পায়ের শেষে
শরৎ খুঁজি
মায়ের আধ-তৈরি মূর্তিটা দেখতে 
কুমোরটুলির বাইরে এক অবাক দৃশ্যে চেয়ে থাকা
বা ঢাকের কাঠির পরে আমি শরৎ খুঁজি‌ 
এখনও একটা শরৎ আছে।
মহালয়ের ভোরে আগমনী গান 
বা ষষ্ঠীর আলোকসজ্জা খুঁজি।
কম বাদ দিলে অনেক কিছুই নেই 
ফ‍্যাসনেবল জামাকাপড় , দামি প্রতিমা ,লাউডস্পিকারে সারাদিন বাজতে থাকা
ফিউশন রবীন্দ্র সঙ্গীতেও একটা শরৎ আছে
পুজো আছে।
শিউলি আছে মুঠো খানেক,
কাশফুল ও।
ঢাক আছে , বাদ‍্যি ও আছে 
কিন্তু শরৎ হারিয়েছে বহুকাল।
না এতটাও বুড়িয়ে যাওয়া হয়নি আমার,
যতটায় একদম নিরস নিথর হয়ে সব আনন্দ থেকে বাদ হয়া যায়।
তবে কোনো এক ফাঁকে ছোট্ট বেলার সেই শরতটা হারিয়ে গেছে।
ঐ শরতটা ..
যেটা ব‍্যক্তিগত ভাবে একটা আমার হতো ,
তোমাদেরও...
ওটা হারিয়েছে।
শুনেছি, যা হারায় একদিন তা আর ফেরে না কখনও।
তবে পুজো আছে,আছে মেতে ওঠাও
দিন বদলায় ,সাথে অনুভূতিটাও,
পুজোর আমেজ হৃদয়ে ঘোলে 
একটা শরৎ ওখানেও আছে
স্মৃতির কেয়াপাতায়।