Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

তিন তালাক বন্ধের ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

সংবাদ একলব্য,৩১ জুলাইঃ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের রায়ে তিন তালাক প্রথা 'অসাংবিধানিক' বলে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই তিন তালাক প্রথা ইসলাম ধর্মপালনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত নয় বলেও জানিয়েছে  সর্বোচ্চ আদালত। পাঁচ সদস্যের ওই সাংবিধানিক বেঞ্চের দুই সদস্য আপাতত তিন তালাক প্রথা বন্ধ রেখে নির্দিষ্ট আইন তৈরির জন্য সরকারকে নির্দেশ দিলেও অন্য তিন বিচারক এই প্রথাকে সরাসরি অসাংবিধানিক বলে রায় দেন। তাঁরা একে অ-ইসলামিক বলেও ঘোষণা করেন। 
প্রধান বিচারপতি জে.এস খেহর এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজির ছয় মাসের জন্য তিন তালাক প্রথা বন্ধ রেখে সরকারকে সেই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাকি তিনজন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, রোহিন্টন এফ নারিম্যান এবং উদয় উমেশ ললিত - যেহেতু এই প্রথা অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন, তাই এখন থেকে ভারতে তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্যরা তিনটি পৃথক রায় দেন - আলাদাভাবে নিজেদের রায় পড়ে শোনান আদালতে।
ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ বেঞ্চ এই মামলার বিচার করেছে।
তিন তালাক প্রথা ইসলাম ধর্মপালনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত কী না, সেই সাংবিধানিক প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছে এই বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চ।
একরকম নজিরবিহীনভাবে গরমের ছুটির মধ্যে এই মামলার একটানা শুনানি চালানো হয়েছে।
যদিও বিচারপতিদের ধর্মীয় পরিচয় ভারতের আইন ও বিচারব্যবস্থায় আলাদা কোনো প্রভাব ফেলে না, তবুও এই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চটিতে পাঁচ ভিন্ন ধর্মী বিচারক ছিলেন। একজন করে মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, পার্শি ও হিন্দু ধর্মের বিচারক ছিলেন এখানে।
তিন তালাক প্রথা নিয়ে ভারতে বিতর্ক অনেকদিনের। তবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি মুসলিম নারী সংগঠন এবং কয়েকজন তালাক প্রাপ্ত মুসলিম নারীদের দায়ের করা মামলাগুলোর কারণে তিন তালাক প্রথা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ বিজেপি'র শীর্ষ নেতারা বারেবারেই তিন তালাক প্রথা তুলে দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড বলছে, একসঙ্গে তিনবার তালাক উচ্চারণ করে বিবাহ বিচ্ছেদ শরিয়া বিরোধী। দীর্ঘদিন ধরেই সব ধর্মের মানুষের জন্য একটি অভিন্ন দেওয়ানী বিধি প্রণয়নের পক্ষে বিজেপি।
সায়রা বানো, আফরিন রহমান, গুলশান পারভিন, ইশরাত জাহান ও আতিয়া সাবরি নামের কয়েকজন তালাকপ্রাপ্ত নারী যেসব পৃথক মামলা দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে, সেগুলোকে একত্রিত করেই সাংবিধানিক বেঞ্চ এই বিশেষ মামলাটি হাতে নিয়েছিল। অনেকগুলো সংগঠন, সরকারি দপ্তর, জাতীয় নারী কমিশন ও অন্যান্য ব্যক্তিরা এই মামলায় অংশ নিয়েছিল।
তিন তালাক প্রথা বন্ধ হবার ঘোষণার পরেই বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে আনন্দের উচ্ছাস দেখা গেছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বিপ্লব দেব জানিয়েছেন- "ত্রিপুরায় তিন তালাকের শিকার মুসলিম বোনদের আমি বিনম্রভাবে অনুরোধ করছি তারা যেন আমার সাথে দেখা করে এবং আমি তাদের দুঃখে অংশীদার হয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কষ্ট দূর করার প্রয়াস নেবো । আমার সাথে দেখা করার জন্য তিন তালাকে পীড়িত মহিলারা মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয়ের 0381-241-5555 এই নম্বরে ফোন করে আমার সাথে দেখা করতে পারেন। যদি আপনারা আমাকে আপনাদের দুঃখের অংশীদার এবং কষ্ট দূর করার সুযোগ প্রদান করেন তাহলে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করব।" 
কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক  প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code