ওয়াশিংটনে খালিস্তানি চরমপন্থীদের গোপন বৈঠক, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ছক ও ভারত বিরোধী পরিকল্পনার নীলনকশা
৪ঠা অক্টোবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের একটি তৃতীয় তলার হলে ঘটে যায় এমন এক ঘটনা, যা সাধারণ মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাগুলির নজরে আসে তীব্র সতর্কতার সঙ্গে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ৭৮ জন খালিস্তানি চরমপন্থী সেখানে গোপনে মিলিত হন এবং ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
৪ঠা অক্টোবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের তৃতীয় তলার একটি হলে ঘটে যায় এমন এক ঘটনা, যা সাধারণ মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ৭৮ জন খালিস্তানি চরমপন্থী গোপনে মিলিত হন। এই বৈঠককে মানবিক সহায়তা সভা বলে প্রচার করা হলেও, গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এটি ছিল মূলত ভারত বিরোধী কার্যকলাপের পরিকল্পনার একটি গোপন সম্মেলন।
এই বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকে সম্প্রতি পাঞ্জাব থেকে বিদেশে ফিরে গেছেন। বৈঠকে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অংশ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সভায় স্থল ও ডিজিটাল প্রচারণার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নীলনকশা তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে খালিস্তানি গণভোট প্রচারণা চালানো হবে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী মাসগুলিতে বিভিন্ন দেশে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কানাডার অটোয়াতে ২৩শে অক্টোবর একটি বড় সমাবেশের পরিকল্পনা থাকলেও, নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সতর্কতার কারণে তা বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে ৩১শে অক্টোবর, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি বৃহৎ প্রতিবাদ সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। এই সমাবেশ ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। খালিস্তানি সমর্থকরা এই সমাবেশের মাধ্যমে তাদের মতাদর্শ ভাগ করে নেওয়া ব্যক্তিদের একত্রিত করার জন্য একটি বিশেষ তথ্য গোষ্ঠী তৈরি করেছে, যা পাঞ্জাবের কিছু নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠনের মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
এই বৈঠকে আরও একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে—খালিস্তানি মতাদর্শে বিশ্বাসী নয় এমন শিখদের কাছ থেকেও সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা। এর জন্য বিভিন্ন কারণে সাহায্যের প্রয়োজন এমন শিখ পরিবারগুলির জন্য আর্থিক সহায়তা দাবি করা হয়েছে। এই আর্থিক সহায়তার প্রস্তাবটি বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে, যা চরমপন্থী সংগঠনগুলির একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া, খালিস্তানি চরমপন্থীরা অমিতাভ বচ্চন এবং পাঞ্জাবি গায়ক দলজিৎ দোসাঞ্জকে টার্গেট করেছে। কানাডার নিষিদ্ধ সংগঠনগুলি একটি ২৪ মিনিটের ভিডিও ভাইরাল করেছে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া হয়েছে। দলজিৎ দোসাঞ্জের অস্ট্রেলিয়ার একটি অনুষ্ঠানে অমিতাভ বচ্চনের পা স্পর্শ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৪ সালের “খুন কা বদলা খুন” স্লোগানকে সমর্থন করে অমিতাভকে টার্গেট করা হয়েছে।
গত পাঁচ মাসে খালিস্তানি চরমপন্থীরা ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য ১১ বার বড় পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে কানাডায় চারবার, আমেরিকায় পাঁচবার, লন্ডনে একবার এবং অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে একবার বিভিন্ন ধরণের আন্দোলন ও প্রচারণা চালানো হয়েছে। যদিও অনেক পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে, তবুও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি প্রতিটি স্তরে সতর্ক রয়েছে।
একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকার মাটি খালিস্তানি চরমপন্থীদের জন্য ক্রমশ অনুকূল হয়ে উঠেছে। গত বছরও ওয়াশিংটনে একটি বড় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে খালিস্তানি চরমপন্থী এবং কিছু সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতারা অংশ নিয়েছিলেন। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে সফল হয়েছে।

 
 
 
 
 
 
.webp) 
 
 
 
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊