হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের জন্য বড় স্বস্তির খবর
কলকাতা, আগস্ট ২০২৫ — পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরল কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে। ‘ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (স্পেশাল এডুকেশন)’ ডিগ্রিধারী প্রাথমিক শিক্ষকরা অবশেষে পেলেন আইনি স্বীকৃতি ও সম্মান, যা তাঁদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাল।
২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বহু প্রার্থীকে ‘অপ্রশিক্ষিত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যদিও তাঁদের বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সেই সময় এই ডিগ্রিকে প্রশিক্ষণের সমতুল্য বলে স্বীকৃতি দেয়নি, ফলে শিক্ষকরা বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
বিষয়টি আদালতে গড়ালে, ২০১৭ সালের ১লা মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের একজন একক বিচারপতি রায় দেন যে ‘ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (স্পেশাল এডুকেশন)’ ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের প্রশিক্ষিত হিসেবেই গণ্য করতে হবে। সেই রায়ের পর শিক্ষকরা প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মতোই সুবিধা পেতে শুরু করেন।
তবে ২০২২ সালের ২৮শে নভেম্বর পর্ষদ একটি তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে এই শিক্ষকদের আবার ‘অপ্রশিক্ষিত’ হিসেবে দেখানো হয়। এই তালিকার ফলে তাঁদের চাকরি বাতিলের আশঙ্কা দেখা দেয়, বিশেষ করে যখন ৩২,০০০ ‘অপ্রশিক্ষিত’ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া চলছিল।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন। শুনানিতে পর্ষদের প্রতিনিধি স্বীকার করেন যে পূর্ববর্তী রায় অনুযায়ী এই শিক্ষকরা প্রশিক্ষিত এবং সমস্ত সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, তালিকাটি তাড়াহুড়ো করে প্রকাশিত হওয়ায় তাতে ভুল ছিল এবং আবেদনকারীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
সব দিক বিবেচনা করে, মাননীয় বিচারপতির নির্দেশ:
• আবেদনকারী শিক্ষকরা প্রশিক্ষিত সহকারী শিক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন
• তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সঠিক বেতনক্রম ও সমস্ত বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে
• পর্ষদের প্রকাশিত তালিকায় থাকা ভুল সংশোধন করতে হবে
এই রায়ের ফলে, বিশেষ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ‘অপ্রশিক্ষিত’ হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষকরা পেলেন সম্পূর্ণ আইনি সুরক্ষা। তাঁদের চাকরি এখন সুরক্ষিত এবং তাঁরা প্রশিক্ষিত শিক্ষক হিসেবে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
0 تعليقات
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊