মোদী-লুলা ফোনালাপ: ট্রাম্পের শুল্ক (tariff) হুমকির মধ্যে ভারত-ব্রাজিল সম্পর্কের নতুন অধ্যায়
নয়াদিল্লি: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক (tariff) হুমকির প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন, যা বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই ফোনালাপ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ট্রাম্প ভারত ও ব্রাজিলের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে উভয় দেশকেই চাপের মুখে ফেলেছেন।
ফোনালাপের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী গত মাসে তার ব্রাজিল সফরের স্মৃতিচারণ করেন। দুই নেতা বাণিজ্য (trade), প্রযুক্তি (technology), জ্বালানি (energy), প্রতিরক্ষা (defence), কৃষি (agriculture), স্বাস্থ্য (health) এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতা (collaboration) জোরদার করার বিষয়ে একমত হন। তারা ভারত-ব্রাজিল কৌশলগত অংশীদারিত্বকে (strategic partnership) নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা বিষয়ে মতবিনিময়ের পাশাপাশি দুই নেতা ভবিষ্যতেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়ে সম্মত হন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ফোনালাপ সম্পর্কে টুইট করে বলেন, “রাষ্ট্রপতি লুলার সাথে ভালো আলোচনা হয়েছে। আমার ব্রাজিল সফরকে স্মরণীয় এবং অর্থবহ করে তোলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা বাণিজ্য, জ্বালানি, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বব্যাপী দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে একটি শক্তিশালী, জনকেন্দ্রিক অংশীদারিত্ব (people-centric partnership) সকলের জন্য উপকারী।”
অন্যদিকে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে তিনি ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমার দেশ তার স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) সহ সমস্ত উপলব্ধ সম্পদ ব্যবহার করবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি ট্রাম্পকে ফোন করব না, কারণ তিনি কথা বলতে চান না। আমি শি জিনপিংকে ফোন করব, আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ফোন করব। আমি পুতিনকে ফোন করব না কারণ তিনি এখন ভ্রমণ করতে পারবেন না। তবে আমি অনেক রাষ্ট্রপতিকে ফোন করব।”
এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে (diplomatically) শক্ত অবস্থান নিচ্ছে এবং ব্রিকস (BRICS)-এর মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী। ভারত ও ব্রাজিলের এই ঘনিষ্ঠতা শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং বৈশ্বিক দক্ষিণের (Global South) দেশগুলোর মধ্যে একটি নতুন সংহতির বার্তা বহন করছে।
এই ফোনালাপের মাধ্যমে ভারত-ব্রাজিল সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হলো, যা ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
0 تعليقات
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊