Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

৫১৬ বছরের ঐতিহ্য—জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে শুরু হলো মনসা পূজো, সাথে বিষহরির গান ও সাত দিনের মেলা

৫১৬ বছরের ঐতিহ্য—জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে শুরু হলো মনসা পূজো, সাথে বিষহরির গান ও সাত দিনের মেলা

516 years of tradition - Manasa Puja begins at Baikunthapur Rajbari in Jalpaiguri, with Bishahari songs and a seven-day fair


জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পূজো এবছর ৫১৬ বছরে পদার্পণ করল। আজ সকালে রাজপুরোহিতদের উপস্থিতিতে পূজার সূচনা হয়। সাত দিনব্যাপী এই পূজো ঘিরে রাজবাড়ি চত্বরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। পূজোর পাশাপাশি থাকছে বিষহরির গান, মেলা, এবং তিনদিন ধরে ভিন্ন ভিন্ন ভোগের আয়োজন।

এই পূজো শুধু জলপাইগুড়ির নয়, উত্তরবঙ্গের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক। রাজবাড়ির সদস্যদের কথায়, এখানে মা মনসা পূজিত হন অষ্টমূর্তিরূপে। মন্দিরে রয়েছে অষ্টনাগের মূর্তি, বেহুলা-লখিন্দর, গোদা-গোদানির প্রতিকৃতি—যা মনসামঙ্গলের রীতিনীতির ছাপ বহন করে। চালচিত্রে ফুটে ওঠে সেই পুরাণ ও লোকবিশ্বাসের সংমিশ্রণ, যা উত্তরবঙ্গের অন্য কোথাও দেখা যায় না।

পূজোর তিনদিন আলাদা আলাদা ভোগের আয়োজন করা হয়—প্রথম দিনে সাদা ভাত, দ্বিতীয় দিনে খিচুড়ি, আর শেষ দিনে মিষ্টি ও পাঁচ রকমের মাছ (ইলিশ, বোয়াল, চিতল, শোল, পুঁটি)। এই ভোগ শুধু ভক্তদের জন্য নয়, এটি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেও বিবেচিত।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে উত্তরবঙ্গের প্রাচীন বিষহরির গান, যা তিনদিন ধরে পরিবেশিত হবে। এই গান শুধু বিনোদন নয়, এটি লোকসংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিষহরির পালা গান শুনতে প্রতিবছর জলপাইগুড়ি ছাড়াও কোচবিহার, দক্ষিণবঙ্গ, অসম ও বিহার থেকেও বহু দর্শনার্থী আসেন।

মেলা এখনও পুরোপুরি জমে ওঠেনি, তবে রাজবাড়ির সদস্যরা জানিয়েছেন, আগামীকাল থেকে মেলার প্রাণচাঞ্চল্য শুরু হবে। কোচবিহারের রাসমেলার মতোই এখানে উপচে পড়া ভিড় হয়, যা জলপাইগুড়ির মনসা পূজাকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ উৎসবে পরিণত করেছে।

এই পূজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি উত্তরবঙ্গের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও লোকবিশ্বাসের এক জীবন্ত দলিল। ৫১৬ বছরের এই ঐতিহ্য আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, প্রভাবশালী এবং আবেগঘন।

إرسال تعليق

0 تعليقات

Ad Code