Governor Returns Aparajita Bill : রাজ্য সরকারের কাছে অপরাজিতা বিল ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল
![]() |
photo credit: NDTV |
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোস সম্প্রতি 'অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (West Bengal Criminal Law Amendment) বিল ২০২৪' রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন। এই বিলের কিছু প্রস্তাবিত বিধান, বিশেষ করে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান এবং শাস্তির কঠোরতা নিয়ে রাজভবন ও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে গুরুতর আপত্তি তোলা হয়েছে।
রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল এই বিলটি ফেরত পাঠানোর প্রধান কারণ হলো এর মধ্যে থাকা বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান। কেন্দ্রের আপত্তির প্রসঙ্গ তুলে রাজভবন জানিয়েছে যে, বিলটিতে প্রস্তাবিত শাস্তিগুলি "নিষ্ঠুর এবং সামঞ্জস্যহীন" বলে মনে করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, এই বিলের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলি নিয়ে রাজভবনকে তাদের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে। তাদের মতে:
- শাস্তির কঠোরতা: অপরাজিতা বিলের প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, ধর্ষণের শাস্তি বাড়িয়ে ন্যূনতম ১০ বছরের জেলের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এটিকে "অত্যন্ত কঠোর ও সামঞ্জস্যহীন" বলে মনে করছে।
- BNS-এর ৬৫ ধারা বাতিল: বিলটিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ২০২৩-এর ৬৫ ধারা বাতিল করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর ফলে ১৬ ও ১২ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে শাস্তির ফারাক মুছে যাবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করে, এমনটা হলে শাস্তির সমানুপাতিক হার থাকবে না।
- বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড: নির্যাতিতার মৃত্যু হলে বা সে কোমায় গেলে ফাঁসির সাজা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিলে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাবেও আপত্তি জানিয়েছে।
উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘাত দেখা গিয়েছিল। বর্তমান রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোসের জমানাতেও সেই সংঘাতের আঁচ মাঝে মাঝে দেখা গেছে। অপরাজিতা বিল ফেরত পাঠানোর এই ঘটনা ফের রাজভবন ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাতের পারদ চড়াতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আলাদা বিল আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর, 'অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (West Bengal Criminal Law Amendment) বিল ২০২৪' বিধানসভায় পেশ করে রাজ্য সরকার এবং বিলটি পাশের জন্য রাজভবনে পাঠানো হয়।
রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই পর্যবেক্ষণগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে, উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সাথে, রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোস 'অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল ২০২৪' রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছেন।
রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ বিলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এখন রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যবেক্ষণ এবং রাজ্যপালের উদ্বেগগুলি বিবেচনা করে বিলটিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে, যা আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
0 تعليقات
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊