শ্রাদ্ধভোজের আয়োজন করলেই ৫১০০ টাকা জরিমানা, বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত গ্রামবাসীর

The idea took root after Bablu Das chose not to hold a funeral feast following his mother’s death, a first for the village.
photo source: News18 Hindi

খাগারিয়া, বিহার: বিহারের খাগারিয়া জেলার মহেশখুন্ত পঞ্চায়েতের ওয়ার্ড নম্বর ৮-এর মহাদলিত টোলা ইংলিশ গ্রামে সম্প্রতি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—গ্রামের কেউ আর ‘মৃত্যুভোজ’ বা শ্রাদ্ধভোজের আয়োজন করতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করলে ৫,১০০ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পেছনে অনুপ্রেরণা ছিলেন গ্রামের বাসিন্দা বাবলু দাস, যিনি তার মায়ের মৃত্যুর পর কোনো ভোজের আয়োজন না করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তার এই পদক্ষেপ থেকেই গ্রামের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতভাবে এই প্রথা বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সংবাদে প্রকাশ, গ্রামের প্রবীণ হরিলাল দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভবিষ্যতে কেউ মৃত্যুভোজ আয়োজন করলে তাকে ৫,১০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই প্রথা বহু পরিবারকে ঋণের বোঝায় ফেলে দেয়, এমনকি অনেক সময় জমি বন্ধক রাখতে হয় শুধুমাত্র সামাজিক মর্যাদা রক্ষার জন্য।

এই উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তি, যেমন—সন্তোষ দাস, পাপ্পু দাস, রামবিলাস দাস, চিরঞ্জীব দাস, মহেশ্বর দাস, পঙ্কজ দাস, পরদেশী দাস, জামুনা দাস, নুনু লাল দাস, সঞ্জয় দাস এবং বেচন দাস। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অপ্রয়োজনীয় আর্থিক চাপ থেকে মুক্ত রাখবে।

এই সামাজিক সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তের পেছনে অখিল ভারতীয় রবি রসিয়া ধর্ম সংগঠন, খাগারিয়া শাখা-র সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছে এবং অনেকেই এটিকে একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন—যেখানে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াও সমাজ নিজেরাই পরিবর্তনের পথে এগিয়ে আসছে।