jamai sasthi : আজ জামাই ষষ্ঠী, ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ

jamai sasthi : আজ জামাই ষষ্ঠী, ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ


লোকদেবী মা ষষ্ঠী। বৈদিক শাস্ত্রে মা ষষ্ঠীর উল্লেখ নেই বটে, কিন্তু বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে প্রায় নিত্য পূজিত তিনি। মানুষের বিশ্বাস, ষষ্ঠীর কৃপায় সন্তানের মঙ্গল হয়। বিভিন্ন ষষ্ঠী পালন করা হয় বিভিন্ন উদ্দেশ্যে। ষষ্ঠীর কোনও মূর্তি হয় না। লোকদেবী ষষ্ঠীর প্রতীক গাছে নিবেদন করা হয় পুজো।


প্রবাদে আছে, যম-জামাই ভাগনা-কেউ নয় আপনা। কারণ যম মানুষের মৃত্যু দূত। জামাই এবং ভাগনা অন্যের বাড়ির উত্তরাধিকারী। তাদের কখনও নিজের বলে দাবি করা যায় না। এদের খুশি করার জন্য মাঝে মাঝেই আদর আপ্যায়ন করে খাওয়াতে হয়। তাই মেয়ে যাতে সুখে-শান্তিতে তার দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারে এজন্য জ্যৈষ্ঠ মাসে নতুন জামাইকে আদর করে বাড়িতে ডেকে এনে আম-দুধ খাইয়ে পরিতৃপ্ত করে। আশীর্বাদস্বরূপ উপহারসমাগ্রীও প্রদান করে ।


জামাই ষষ্ঠীর (jamai sasthi 2025) দিন জামাই’কে ঘিরে শাশুরি মায়েদের এই অনুষ্ঠান অনেকটা উৎসবের আকার ধারন করে । জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠী পূজা করেন । ষষ্ঠীকে সন্তান-সন্ততি দেবী বা দেববহির্ভূত লৌকিক দেবীও বলা যায় । ঘর ও মন্দিরের বাইরে বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অর্থে অরণ্য রচনা করে এ পূজা করা হয়। এজন্য জামাই ষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলা যায়। এ পূজায় ধর্মীয় সংস্কারের চেয়ে সামাজিকতা বিশেষ স্থান পেয়েছে ।


jamai sasthi : আজ জামাই ষষ্ঠী, ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ



ষষ্ঠী পূজায় ব্রতীরা সকালে স্নান করে উপবাস থেকে নতুন পাখার ওপর আম্রপল্লব, আমসহ পাঁচফল আর ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পূজার উপকরণের সঙ্গে রাখে। করমচাসহ পাঁচ-সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার ওপর সাজিয়ে পূজার সামনে রাখতে হয়। ধান এ পূজার সমৃদ্ধির প্রতীক, বহু সন্তানের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং দুর্বা চিরসবুজ, চির সতেজ অসীমতার বেঁচে থাকার ক্ষমতার অর্থে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ দুর্বা হল দীর্ঘ জীবনের প্রতীক। শাশুড়ি-মেয়ে-জামাতার দীর্ঘায়ু কামনা করে ধানদুর্বা দিয়ে উলুধ্বনিসহ ষাট ষাট বলে বরণ করেন।




জৈষ্ঠ্য মাসে বাংলার গাছগাছালি আম, জাম, লিচু, কাঁঠালে ভরে ওঠে ৷ তাই শাশুড়িরা ষষ্ঠীর দিন জামাইকে এই ফলের থালা সাজিয়ে দেন ৷ জামাইয়ের কপালে মঙ্গলকারী দইয়ের ফোঁটা দিয়ে আশীর্বাদ করেন। জামাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনায় মা ষষ্ঠীর তেল-হলুদের ফোঁটাও দেন। তেল-হলুদে ডুবিয়ে সুতো কবজিতে বেঁধে দেন শাশুড়ি-মা ৷ জামাইকে নতুন বস্ত্র উপহার দেওয়া হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। সেই সঙ্গে জামাইও শাশুড়িকে প্রণামী বস্ত্র দেন। এইদিন জামাইকে আদরে খাওয়ান শাশুড়িরা। এই সময়ে জামাইকে হাত পাখা দিয়ে পাখা দেওয়ার প্রথাও রয়েছে।