বন্যায় তিনজনের প্রাণহানির ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া

loss of three people in the flood
DVC থেকে জল ছাড়া হচ্ছে



রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জ্জী, আসানসোল:-

গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে ওঠে আসানসোল পুরনিগমের গারুই ও নুনিয়া নদী। এরফলে পার্শ্ববর্তী নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে যায়। ইতিমধ্যে সেখানে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

প্রথম জন হলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী চঞ্চল বিশ্বাস ( ৫৯)। সুগম পার্কের বাসিন্দা চঞ্চল বাবু ছিলেন আসানসোলের একটি সরকারি অফিসের কর্মচারী। চলতি বছরেই তার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা। তার স্ত্রী একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।


প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে জানা যাচ্ছে সবার নিষেধ অমান্য করে চঞ্চল বাবু বন্যার জলের মধ্যে দিয়ে চারচাকা গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গারুই নদীর স্রোতের টানে তার গাড়ি ভেসে যায়। তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ৩ রা আগস্ট এনডিআরএফের দল কল্যানপুর হাউজিং কমপ্লেক্স থেকে কিছুটা দূরে গাড়ুই নদী থেকে গাড়ি সহ চঞ্চল বাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে।


এই প্রবল বৃষ্টিতে আসানসোলে আরও দুটি জলে ভেসে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে এক খনি কর্মী সহ দু'জনের মৃত্যু হয়। শনিবার সকালে সেই দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের একজন হলো আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের ডিপোপাড়ার কেএস রোডের বাসিন্দা রোহিত রায় (২৯) ও অপরজন হলো আসানসোল দক্ষিণ থানার রাহালেনের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ রায় ( ৩৯)।


জানা যাচ্ছে ইসিএলের কালিপাহাড়ি কোলিয়ারির কর্মী গৌরাঙ্গ বাবু বৃষ্টির মধ্যে মোটরবাইকে বাড়ি থেকে কোলিয়ারিতে যাচ্ছিলেন। কালিপাহাড়ি রেল সেতুর কাছে বন্যার জলের মধ্যে দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার করলে স্রোতের টানে মোটরবাইক সহ গৌরাঙ্গ বাবু ভেসে যান। তারপর থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে কালিপাহাড়ি রেল ব্রিজ থেকে বেশকিছুটা দূরে ভেসে যাওয়া খনি কর্মী দেহ উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে রোহিত বাবু বাড়ির অদূরে সুকান্ত পল্লীতে গাড়ুই নদীর উপরে একটি অস্থায়ী সেতু পার হওয়ার সময় বেসামাল হয়ে পা পিছলে নদীতে পড়ে তলিয়ে যান। তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা। শেষ পর্যন্ত ৩ রা আগস্ট ভোর চারটে নাগাদ কাল্লা মোড়ে গাড়ুই নদী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।


বন্যায় তিনজনের প্রাণহানির ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।