চরম ভোগান্তি ! মালগাড়ির নীচ দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের
জলপাইগুড়ি:
জায়গা রেলেরই। দাঁড়িয়ে আছে ইঞ্জিন বিহীন একটি মালগাড়ি। তত্বগতভাবে এটা নিয়ে তর্কবিতর্কের কোন অবকাশ না থাকলেও চূড়ান্ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নাগরাকাটার বাসিন্দাদের। তাও এক আধ বেলা নয়। টানা ১৫ দিন ধরে। বাধ্য হয়ে সেটির তলা দিয়ে লাইন পেরিয়ে এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করছেন এলাকার শয়ে শযে জনতা। ঘটনাটি স্টেশনের অদূরেই কাঠালতলা নামে একটি স্থানের। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশন জানিয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
এই সমস্যা নাগরাকাটায় নতুন নয়। মাঝে মাঝেই এমনটা হয়। স্টেশন লাগোয়া এক দম শেষের লাইনে যখন কোন ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে সেটির বগি কাঠালতলা পর্যন্ত এসে পৌঁছয়। ঠিক তখনই দেখা যায় যাত্রা যন্ত্রণার চেনা ছবি। সোমবার তা ১৫ দিনে পড়লো। স্মরণাতীত কালের মধ্যে ওই স্থানে এতদিন ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনা প্রথম বলেই স্থানীয়রা জানাচ্ছেন।
যেখানে এই সমস্যা সেই রেল লাইনের এক পাড়ে নাগরাকাটা বাজার। অন্য পাড়ে কাঠালতলা ও সার্কাস লাইন এলাকা। সেখানে মাছ-মাংসের বাজার। দু ধারেই বিস্তীর্ণ জনবসতি। নিত্য প্রয়োজনেই অগুন্তি বাসিন্দাদের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে যাতায়াত করতে হয়। সেই তালিকায় রয়েছে স্কুল পড়ুয়া, চা বাগানের শ্রমিক, ব্যবসায়ী, গৃহস্থ বধূ, চাকরিজীবি থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষ। লক্ষ্মী প্রসাদ নামে এক বাসিন্দা বলেন, ট্রেনের তলা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে আঘাত লাগার ঘটনাও ঘটছে। কবে যে এই সমস্যা দূর হবে কে জানে। সীতিশ ওরাওঁ নামে এক মুরগীর মাংস বিক্রেতা বলেন, দোকান থেকেই দেখতে পাই এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতে প্রত্যেককে দারুণ দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। বয়স্কদের সমস্যা আরো বেশি। ছবিলাল ছেত্রী নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, কয়েক বছর আগে এরকম থেমে থাকা একটি ট্রেনের তলা দিয়ে পার হওয়ার সময় এক যুবক মারাত্মক জখম হয়। ট্রেনটি সেদিন হঠাত করে ছেড়ে দিয়েছিল। মহম্মদ শুভান নামে এক ব্যবসায়ীর কথায়, স্কুল পড়ুয়াদের দূর্দশা দেখলে সবচেয়ে খারাপ লাগছে। সুনীল রায় নামে এক ব্যক্তি বলেন, ভোগান্তির পরিমাণ বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
সমস্যার সমাধান কি। স্থানীয়রা বলছেন ফুট ওভারব্রীজ বা আন্ডারপাশ তৈরি করা প্রয়োজন। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভুজেল বলেন, এই দাবির কথা রেলকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। দ্রুত এর বিহিত হওয়া প্রয়োজন। নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, নিজেদের জায়গায় ট্রেন থামবে তা নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে এর জেরে বাসিন্দাদের যে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে সেটাও রেল মন্ত্রককে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।
নাগরাকাটা স্টেশন সূত্রের খবর একটি ইঞ্জিন মিললে কাঠালতলার যেখান দিয়ে বাসিন্দাদের যাতায়াত চলে মালগাড়ির বগিতে রুদ্ধ হয়ে থাকা ওই অংশটুকু অন্তত অন্তত মুক্ত করা সম্ভব হয় সে ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এই্ মুহুর্তে সবচেয়ে বড় বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঠিক কি কারণে ওই মালগাড়ি একদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে সেই প্রশ্ন। সঠিক উত্তর মিলছে না কোন মহল থেকেই।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊