প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
চলে গেলেন বাম জমানার শেষ সেনাপতি। ২০০০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব। বৃহস্পতিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। ব্যক্তিগত সততার নিরিখে এক বিরল রাজনীতিক। ধুতি-পাঞ্জাবি এবং কোলাপুরি চপ্পলে আপাদমস্তক বাঙালি ভদ্রলোক।
পূর্বপুরুষের আদি নিবাস বর্তমান বাংলাদেশ। ১৯৪৪ সালের ১লা মার্চ বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর এলাকায় শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে পাশ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলা অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। ক্রিকেট ও কবাডি খেলতেন। চোখের সমস্যার কারণে ছাড়তে হয় ক্রিকেট। কিন্তু ক্রিকেটে তাঁর টান ছিল যার কারণেই সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে তার সখ্যতা ছিল।
১৯৬৬ সালে বুদ্ধদেব সিপিএমের সদস্য হন। দলে যোগ দেওয়ার পর মূলত দলীয় পত্রপত্রিকা সম্পাদনা এবং লেখালিখির দায়িত্ব নিয়েছিলেন । ষাটের দশকের শেষের দিকে ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন (ডিওয়াইএফআই)-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক হন বুদ্ধদেব। সত্তরের দশকের গোড়ায় সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য হন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় তথ্য ও জনসংযোগ দফতর তথা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮২-তে হারের পর ১৯৮৭ তে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জিতে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী হন।
১৯৮৪ সাল থেকে বুদ্ধদেব সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য। ১৯৮৫ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে জ্যোতি বসুর সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হন। পলিটব্যুরোর সদস্য হন ২০০০ সালে। ২০০০ সালের নভেম্বরে জ্যোতি বসুর অবসরের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ২০১১ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য রাজনীতিতে বড় পটপরিবর্তন ঘটে। বুদ্ধদেবের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টকে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ক্ষমতায়। অবসান হয় দীর্ঘ সাড়ে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের। তারপরেও সুভদ্র এই রাজনীতিক শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ফেরাননি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊