সমুদ্র সৈকতে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ভাঙ্গন! সরকারের দিকে তাঁকিয়ে এলাকাবাসী 

Medinipur


তাজপুর, পূর্ব মেদিনীপুর :

তাজপুর সমুদ্র সৈকতে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ভাঙ্গন! জল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট। মেরিন ড্রাইভ সম্পন্ন হয়ে গেলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শঙ্করপুর তাজপুর এলাকার কিছু অংশ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভাঙ্গন ধরেছে বাঁধে।সমস্যায় উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন কিছু বাসিন্দারা। পূর্ণিমার কোটালে ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে শংকরপুর , তাজপুর পূর্ব জলধা এই সমস্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় একের পর এক সমুদ্রের পাড় ভাঙ্গায় আতঙ্কে এলাকার মানুষজন। সেই সঙ্গে কয়েকটি দোকান কার্যত সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। সেইসঙ্গে স্থানীয় দোকানদার থেকে মানুষজন অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

তাদের দাবি অবিলম্বে প্রশাসন এসে সুরাহা করুক। একদিকে পাড় ভাঙছে তেমনি বেশ কয়েকটি দোকানে জল ঢুকেছে। পূর্ণিমার কোটাল থাকায় কার্যত উত্তাল হয়েছে দীঘার সমুদ্র। আর সেই উত্তালের জেরে বেশ কিছু ঝাউ গাছ এবং সমুদ্রের পাড় প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকায় পরিদর্শনে আসেন জনপ্রতিনিধিরা, প্রধান এসে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।

প্রধান সবিতা খাটুয়া বলেন আমি বারবার রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি অবিলম্বে এই এলাকার মানুষদের সুরাহা যদি না হয় পরবর্তীকালে অনশনেও নামবেন বলে এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছি যে এই এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার ধরে কোন কংক্রিটের বাঁধ নেই আর একের পর এক পাড় ভাঙ্গা থেকে শুরু করে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। সামনে রয়েছে সাড়াসাড়িকোটাল এবং সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস।

আইলার সময় এই এলাকার প্রায় কয়েক কিলোমিটার সমুদ্রের জল ঢুকে গেছিল যেখানে কয়েক লক্ষ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন এবং কেউ কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছিলেন আইলা ঘর আবার কোথাও কেউ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন অন্যত্র। তাই পুনরায় সেই আতঙ্ক আবার ফিরে আসতে চলেছে এলাকার মানুষদের মনে তাই এলাকার বাসিন্দারা চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই এলাকার কোন কিছু স্থায়ী বাঁধ গড়ে তোলা হোক। সেই সঙ্গে স্থানীয় রামনগর এক ব্লকের বিডিও পূজা দেবনাথ এলাকার পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথাও বলেছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই এলাকার অস্থায়ীভাবে কোন বাঁধ তৈরি করা যায় কিনা তার চিন্তা ভাবনা করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

সেইসঙ্গে তিনি আরো বলেন যেহেতু সামনে বৃষ্টি কাল তাই অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা বা কিছু পাথর ফেলে যাতে মানুষদের বা মানুষের সম্পদ রক্ষা করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। কামনগর এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সার বলেন অতি দ্রুত আমরা তার পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।

দীঘা থেকে সমুদ্র পার বরাবর মেরিন ড্রাইভ হলেও তাজপুরের কিছুটা অংশ সমুদ্রের গ্রাসে বারেবারে পড়ে। আগামী দিনে সেই অংশের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে এমনটাই আশায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটক রাও।

ইতিমধ্যেই শংকরপুর সমুদ্র সৈকতে জলোচ্ছ্বাসের সময় সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক যুবতী। অন্যদিকে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে পারভাঙ্গা দোকান ঘর ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় রীতিমত সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আগামী দিনের শংকরপুর তাজপুর উপকূলবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন রামনগর সমিতির সভাপতি নিতাই চরণ সার।