সব্জীর পর এবার ফুলের বাজারেও মূল্যবৃদ্ধির ছ্যাঁকা
আনাজের পর ফুল কিনতে গেলেও পকেট ফাঁকা হচ্ছে মধ্যবিত্তের! এবার ঠাকুরের চরণতলে ফুল দিতে কিংবা ফুলের সুগন্ধ পেতেও হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের।
একেই লাগাতার আকাশকালো করে বৃষ্টিতে নাজেহাল জলপাইগুড়িবাসী। উপরন্তু, যে হারে বাজারে আনাজের দাম বাড়ন্ত তাতে থলে ভরা বাজার ছেড়ে ছোট্ট ব্যগে অল্প সল্প সবজি কিনে নিতে যেতে হচ্ছে। এদিকে, পুজোর ফুল কিনতেও পকেট গড়ের মাঠ হওয়ার জোগাড়। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কদমতলায় এক ফুলের দোকানে নিত্য পুজোর ফুল কিনতে এসেছিলেন শহরের বাসিন্দা রবীন্দ্র জানা। বাড়িতে পুজোর জন্য কমলা গাঁদা ফুলের প্রয়োজন তাঁর। কিন্তু দোকানীর কাছে একটা চেনের দাম শুনেই তার চক্ষু চড়কগাছ। কিছুদিন আগেও যেখানে একটা গাঁদার চেনের দাম ছিল ১০-১৫ টাকা, বা খুব বেশি হলে ২০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫-৪০ টাকায়। কিন্তু দেবতাকে তো অর্পণ করতেই হবে। তাই ৩৫ টাকা দিয়েই একটি গাঁদার চেন কিনে বাড়ির উদ্যেশ্যে রওনা হলেন তিনি। যাওয়ার আগে দোকানদারের প্রতি তার উক্তি, এমনিতেই বৃষ্টিতে সবজি বাজারে আগুন। এখন দেখছি ফুলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। সামান্য পুজো দিতেই শেষ হয়ে যাচ্ছি।
জলপাইগুড়ি শহরের অধিকাংশ ফুলের দোকান কদমতলা সংলগ্ন ডিবিসি রোডে। প্রায় সবকটি দোকানেই জিজ্ঞেস করে দেখা গেল দাম সেই একই। বৃষ্টিতে ফুল আমাদের উত্তরবঙ্গে সেভাবে হয় না। কিছুটা গঙ্গার ওপার অর্থাৎ নদীয়া, বনগাঁ, রানাঘাট আর বাকি ব্যাঙ্গালোর ও শিলিগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়িতে ঢোকে। সেজন্য দাম বেশি বলে মত ব্যবসায়ীদের। তাদের যুক্তিতে বছরের অন্যান্য মরশুমে ব্যবসা ভাল থাকলেও বর্ষার সময়ের তিনটি মাস সেভাবে লাভ হয় না। তার উপর রথযাত্রা থাকায় ফুলের চাহিদা এই বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও বেড়েছে। সেজন্যও দাম একটু বেশি যাচ্ছে বলে জানালেন ব্যবসায়ী মিন্টু মজুমদার। তার যুক্তি, যেহেতু এই ফুলের সিজন এখন নয়, তাই অনেকটা বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে। বিক্রির ক্ষেত্রেও দামটা বেড়ে যাচ্ছে।
বাজারের অন্যান্য ফুল বিক্রেতাদের কথায়, এখন একটি গাঁদা ফুলের চেন কিনতে হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা দিয়ে। কোনও সময় আরও বেশি দামে কিনতে হয়। শুধু কিনে বিক্রি করলেই যে লাভ হয় তেমনটা নয়। কারণ আমাদের লটে কিনতে হয়। কিন্তু বর্ষার সময় ফুল আনার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও বেশি। কারণ ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কৈলাস পাসোয়ানের মত ফুল বিক্রেতাদের দাবি, শুধু গাঁদা ফুলই নয়, বর্ষাকালে রজনীগন্ধা, গোলাপ এবং অন্যান্য ফুলও দোকানে বেশিদিন রাখা যায় না। নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলোও আনা হয় অল্প এবং দাম পরে প্রতি পিসে অন্যান্য মরশুমের থেকে ৫-১০ টাকা বেশি। অন্যান্য সময়ে রজনীগন্ধা পাঁচদিন পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু বর্ষাকালে তিনদিনের বেশি টেকানো যায় না যেকোনও ফুলকে। একদিকে সবজি, মাছ মাংস অন্যদিকে, ফুল...মূল্যবৃদ্ধির চাপে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊