সাড়ে চারশো বছর আগে পাতাল ভেদ করে ওঠেন দেবী
জয়নগর :
প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে পাতাল ভেদ করে উঠেছিলেন দেবী। সেই থেকে জয়নগরের ময়দায় পুজিত হয়ে আসছেন পাতালভেদি দক্ষিণাকালী। কালীপুজোর রাতে দেবীর পুজো ঘিরে ময়দা কালীবাড়িতে ঢল নামে হাজার মানুষের। এই কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরী। কথিত আছে, সে সময়ে জঙ্গলে ঢাকা এই পথ দিয়ে জলপথে বাণিজ্য করতে যেতেন রাজা। তখনই এক দিন এই এলাকায় নদীর ধারে একটি বকুল গাছের ডালে এক বালিকাকে দোল খেতে দেখেন। ঘন জঙ্গলে এ ভাবে এক বালিকাকে দেখে আশ্চর্য হন তিনি। পর পর কয়েক দিন এই দৃশ্য দেখার পরে নৌকো থেকে নেমে বালিকার খোঁজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলে না। রাজা স্বপ্নাদেশ পান, ওই বকুল গাছের কাছেই মাটির নীচে রয়েছেন দেবী দক্ষিণাকালী। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি পাতাল ভেদ করে উঠবেন। রাজাকে তাঁর পুজোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাজা ওই জায়গায় আসেন। খোঁজ করে এক জায়গায় মাটির নিজে একটি শিলা খুঁজে পান তিনি । সেই শিলাকে কেন্দ্র করেই মন্দির তৈরি হয়।
শুরু হয় শিলারূপী দেবীর পাতালভেদের অপেক্ষা। অনেকে বলেন, “শিলাকে তোলার চেষ্টা করেছিলেন রাজা। এমনকী, হাতি দিয়ে টেনে তোলার চেষ্টা পর্যন্ত হয়েছিল। কিন্তু ফল হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ে নিজে থেকেই মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে শিলা। সেই শিলাই দেবীরূপে পুজো হয়। অনেকে বলেন, অতীতে ময়দানব এই দেবীর পুজো করতেন। সেই থেকেই এই এলাকার নাম হয় ময়দা। রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর দেখা সেই বকুল গাছ এখনও রয়েছে মন্দিরের এক প্রান্তে।
স্থানীয় মানুষ জন জানান, এই গাছে কখনও ফল হয় না। শুধু ফুল হয়। রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই ময়দায় নিয়ম করে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী দক্ষিণাকালী। এমনিতে প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দেবীর পুজো হয়। প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। কালীপুজোয় রাতভর পুজো হয় এখানে। দূরদূরান্ত থেকে ভিড় করেন হাজার হাজার ভক্তরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊