চীনা আলোতেই মজে দেশবাসী, ফিকে পড়েছে প্রদীপের আলো!

Diwali



পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ই নভেম্বর ২০২৩ঃ 

দূর্গা পূজা, বাঙালির সবথেকে বড়ো উৎসব। তবে কালী পুজোতেও থাকে বাঙালির উন্মাদনা। উমার ঘরে ফেরার পালা শেষ, এবার ঘটবে শ্যামার আগমন। আর হাতে গোনা কদিন বাকি তারপরেই শ্যামা মায়ের পুজোর সাথে সাথে আলোর উৎসবে মেতে উঠবে বাঙালি।



তবে যুগ বদলেছে, দীপাবলি উৎসবে প্রদীপের আলো ক্রমশ ফিকে হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের কাছে। রঙবেরঙের টুনি বাল্ব ও আরও নানান বৈদ্যুতিক লাইটের দাপট বাড়ছে। খুব কম কয়েকজনই আছেন যাঁরা প্রদীপের আলোকেই বেছে নেন। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ীর কুমোর শিল্পীরা জানিয়েছেন, দীপাবলির প্রাক্কালে প্রদীপ বিক্রিতে বেশ ভাটা পড়েছে। তবুও তাঁরা বংশপরম্পরার এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে এবং কিছুটা এই উৎসবের সময় লাভের মুখ দেখতে মাটির প্রদীপ বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।



কেশিয়াড়ী এলাকায় কখনো গেলেই দেখতে পাবেন রাস্তার দুই দিকের ঘরগুলির উঠোনে বসে শিল্পীরা মাটির প্রদীপ, দীপাবলির পুতুল তৈরি করতে চরম ব্যস্ত। জেলা শহর তো বটেই এছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এখানকারই মাটির প্রদীপ, দীপাবলির পুতুল বাজারে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে মেশিন এবং হাতের চাকায় তৈরি করা হচ্ছে মাটির প্রদীপ। এখানে অবশ্য সারা বছরই মাটির হাঁড়ি, থালা, বাটি, গ্লাস সহ প্রয়োজনীয় রান্নার সামগ্রী এছাড়া ঘর সাজানোর জন্যও হরেক রকম জিনিস তৈরি করা হয়। তবে সাধারণত কালীপুজোর আগে থেকেই প্রদীপ আর দীপাবলির পুতুল বানানো শুরু করেন শিল্পীরা।



এই এলাকার এক শিল্পী রণজিৎ বেরা জানিয়েছেন, "তাদের বাপ ঠাকুরদাদারা এই কাজ করতেন তাই এই কাজে নিজেদের লিপ্ত রাখতে হচ্ছে তাদের। তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অবশ্য এই শিল্পে নিজেদের জড়াবে কিনা তা তারাই জানে।" পরিশ্রম যতটা হয় ততটা মজুরি পাওয়া যায় না, আগের তুলনায় বিক্রিও অনেক কম বলে আক্ষেপ করেন তারা। এদিকে জিনিস তৈরীর মাটির দামও ভীষণ চড়া। এই প্রসঙ্গে আরেক শিল্পী নূপুর বেরা জানান, "আমরা মৃৎশিল্পী হিসাবে সরকারের কাছ থেকে কোনো ভাতা পাইনা, শুধুমাত্র রোজগারের টানে এই পেশায় রয়েছি।এছাড়াও বর্তমানে ইলেকট্রিক প্রদীপ, টুনি বাল্ব এসবের দৌড়াত্ম্যে এখন মাটির প্রদীপের বাজার অনেকটাই কমেছে। যে টুকু বিক্রি হয় তাই দিয়ে কোনও রকম চলে শিল্পকর্ম আর সংসার।।"