Dr. Ranjit Das: ২৫টি ডিগ্রী, নাম তুলেছেন এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে, একাধারে শিক্ষক ও সাহিত্যিক

Ranjit Ghosh


২৫টি ডিগ্রী করে নতুন রেকর্ড গড়লেন বাংলার শিক্ষক ড.রঞ্জিত দাস। ২৫টি এডুকেশানাল ডিগ্রী অর্জন করে ইন্ডিয়া বুক অব্ রেকর্ডস এর পাশাপাশি এশিয়া বুক অব্ রেকর্ডসেও নাম তুলেছেন রঞ্জিত বাবু। ২০২১ সালে ১৫টি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রীর জন্য ইন্ডিয়া বুক অব্ রেকর্ডসে নাম নথিভুক্ত হয়েছিল। আর এবার আরও এক নয়া রেকর্ড। এশিয়া বুক অব্ রেকর্ডসে নাম তুললেন এই প্রতিভাবান ব্যক্তি। তিনি শুধু একজন শিক্ষকই নন পাশাপাশি একজন সাহিত্যিকও। লেখালেখির সাথে তাঁর গভীর সম্পর্ক।




বাগনানের টেঁপুর নবাসন অনন্তরাম উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরাজী শিক্ষক ড. রঞ্জিত দাস। ১৯৮৮ সাল থেকে শিক্ষকতার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন অধ্যয়ন ও সাহিত্যচর্চা করে আসছেন। কলিকাতা,বর্ধমান,বিদ্যাসাগর, ইগনু সহ মোট ছ`টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড. এম.ফিল, পি. এইচ ডি সহ ২৫ টি ডিগ্রী এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ও পোস্ট গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন। ১৩টা বিষয়ে ১৩ টা এম.এ, এম.কম তাঁর বিশেষ কৃতিত্ব।




ইংরাজী, বাংলা, ডিসটেন্স এডুকেশন, দর্শন,ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সোসিওলজি, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, রুরাল ডেভেলপমেন্ট, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, গান্ধী অ্যান্ড পিস্ স্টাডিজ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এবং মাস্টার অফ কমার্সে পোস্ট গ্রাজুয়েট। নটি এম.এ তে ফার্ষ্ট ক্লাস, দুটো এম.এ তে ডিস্টিংশন ও গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। চতুর্দশ মাস্টার ডিগ্রী এম.এ ইন কর্পোরেট সোসাল রেস্পন্সিলিবিটি অর্জনের পথে। আর.কে. নারায়নের `ভেন্ডার অফ্ সুইট্স`-উপন্যাসের এর উপর ডেজারর্টেশান করে ইংলিশে এম্.ফিল করেছেন এবং নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে "পশ্চিম বাংলায় ওডিএল সিস্টেমে স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস"- এর উপর পি এইচ ডি করেছেন।ডিসটেন্স এডুকেশন, হায়ার এডুকেশান, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অপারেশন-এর উপর পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং ক্লাইমেট চেঞ্জ ও এগ্রিকালচারাল পলিশির উপর পোস্ট গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট করেছেন।

Dr. Ranjit Ghosh



২০০২ সালে IGNOU-র MADE (MA in Distance Education) পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম হওয়ার জন্যে স্বর্ণপদক (Gold Medal) লাভ করেন রঞ্জিত বাবু। ২০০৩ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অতিথি হিসেবে নতুন দিল্লীর রাজপথে ২৬শে জানুয়ারির কুচকাওয়াজ উপস্থিত থাকার আমন্ত্রন পান এবং বিশেষভাবে সম্মানিত হন। ২০১৫ সালে IGNOU-র MA in Rural Development (স্নাতকোত্তর গ্রামোন্নয়ন) পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম হওয়ার জন্যে দ্বিতীয় বার স্বর্ণপদক (Gold Medal) অর্জন করেন। India Book of Records, Indian Book of Records,World`s Greatest Record, India`s World Record, Profile of International Talents and Intellectuals{PITI), Highrange Book of World Records, Exclusive World Records বিভিন্ন সংস্থা তাঁকে রেকর্ড ডিগ্রী হোল্ডার হিসেবে সম্মানিত করেছে।




কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে কবিতা, ছোটগল্প ও উপন্যাসের উপর মোট আটটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইংরাজি ভাষায় লিখিত ৭৫টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতা গ্রন্থ ‘The Roses of Dreamland’। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস “সাড়ে দশ মাসের গল্প”। এই বছর প্রকাশিত হয় ২৮টি ভিন্নস্বাদের নির্বাচিত গল্প নিয়ে ‘গল্প সমগ্র’। ১০০ টি প্রেম ও বিরহের `১০০ টি নির্বাচিত কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘পুষ্পবাণ`-নামে একটি কাব্য। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য বহুবার সাহিত্য সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন তিনি।



১৯৮৮ সালে ডিসেম্বর মাসের পয়লা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাব্লকে অবস্থিত দক্ষিনচংরাচক সুকান্ত বিদ্যাপীঠে ইংরাজির সহকারী শিক্ষক হিসেবে স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন এবং বর্তমানে বাগনান অঞ্চলে অবস্থিত টেঁপুর নবাসন অনন্তরাম উচ্চবিদ্যালয় নামে হাওড়া জেলার একটি প্রাচীন ও স্বনামধন্য উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইংরাজী ও বাংলা বিষয়ে পাঠদান করেন। মোট চারটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। সংস্কৃত, ইংরাজী এবং বাংলা বিষয়ে পাঠদান করেছেন তিনি। শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি তিনি খুবই যত্নশীল। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও গ্রহণ ক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষণ পদ্ধতি অবলম্বন করে সফলভাবে পাঠদান করতে তিনি সিদ্ধহস্ত। তিনি ছাত্র-ছাত্রী মহলে খুবই জনপ্রিয়। শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের প্রতি খুবই যত্নশীল। কোকারিকুলার একটিভিটিজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণের প্রতি আগ্রহী করে তোলা তাঁর বিশেষ কৃতিত্ব। শিক্ষার্থী পরিষেবা প্রদানকরা তাঁর ব্রত। দেশপ্রেম, জাতীয় সংহতি, মানবতাবোধ,সহমর্মিতা, সহিষ্ণুতার আদর্শের প্রতি ছা্ত্রছাত্রীদের অনুপ্রানিত করা তাঁর কর্তব্য বলে মনে করেন।

Dr. Ranjit Ghosh



তিনি বলেন, "পড়াশুনার চর্চার মধ্যে থাকলে নিজেকে উজ্জীবিত মনে হয় যা সফলভাবে পাঠদান করার পক্ষে সহায়ক হয়। জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে বয়স কোনো অন্তরায় নয়। প্রবল ইচ্ছাশক্তি, একাগ্রতা ও অধ্যবসায় থাকলে জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে কোনো বাধাই বাধা নয়। পড়াশুনার মধ্যে থাকলে এক বিশুদ্ধ আনন্দ,সুখ ও শান্তি পাওয়া যায়। অশুভ আবেগ থেকে মনকে নিয়ন্ত্রিত করা যয়। মনে জটীলতা বাসা বাঁধার সুযোগ ও সময় পায় না। তাছাড়া যতদিন বাঁচি ততদিন শিখি এই ধারনাকে বাস্তবায়িত করা যায়।তাঁর মতে জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ চরিতার্থ করার সুশৃঙ্খল উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম অনুসারে অধ্যয়ন করা এবং নিয়মিত পরীক্ষায় বসে সাফল্য অর্জন করা। নতুন প্রজন্মের সঙ্গে অধ্যয়ন করলে বিশেষ আনন্দ পাওয়া যায়। অধ্যয়ন অনুশীলনের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক ও প্রক্ষোভিক সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। প্রাত্যহিক কর্তব্যকর্ম সম্পন্ন করে যে অবসর সময় পাওয়া যায় তাকে গঠনমূলক পদ্ধতিতে কাজে লাগানো যায় পড়াশোনার মাধ্যমে। অধ্যয়নকে বিশুদ্ধ বিনোদন বলা যেতে পারে। অধ্যয়ন এক অনির্বচনীয় সুখ প্রদান করে। বিচিত্র বিষয়ে জ্ঞানার্জন করার তাগিদ চরিতার্থ করা যায় জীবনব্যাপী শিক্ষালাভের মাধ্যমে।" ড.রঞ্জিত দাস জীবনব্যাপী শিক্ষালাভের ধারণাকে বাস্তবায়িত করতে চান।