কৃষক সমাবেশ থেকে মমতা-অভিষেককে আক্রমণ, রাজ্যের দুই জেলাশাসকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শুভেন্দু
সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান:
আসানসোল দুর্গাপুরের কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁকে খুনের ঘটনায় বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিং শুক্রবারই নিহত রাজু ঝাঁয়ের বাড়িতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করলেন। আর এদিনই বিকালে বিজেপির কৃষক মিছিলে অংশ নিতে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই প্রসঙ্গে জানিয়ে গেলেন, অর্জুন সিং বিজেপির সাংসদ আর তৃণমূলের নেতা। অর্জুন সিং কেন রাজ্য পুলিশের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছেন – এর উত্তর তৃণমূল দিতে পারবেন, আমি নই। বস্তুত অর্জুন সিংকে নিয়ে শুভেন্দুর এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়ে গেল চর্চা।
এদিন রাজু ঝাঁ খুন সম্পর্কে বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের জাতীয় সড়কের দুধারই বিপদজনক হয়ে উঠেছে। শক্তিগড়ে দাঁড়ায় না এমন লোক নেই। কিন্তু আর দাঁড়ানো যাবে না। যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে তাতে পুলিশমন্ত্রী হিসাবে মমতা ব্যানার্জীর ব্যর্থতা আবার প্রমাণিত হল। রাজু ঝাঁ কয়লা মাফিয়া ছিলেন না ভদ্রলোক ছিলেন সেটা বিতর্কের বিষয়। যেভাবে প্রকাশ্যে কর্মচঞ্চল শক্তিগড়ে গুলি করে দিয়ে চলে গেল তাতে প্রমাণিত হয় এই রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা নেই। পুলিশ ব্যস্ত পিসি ভাইপোকে পাহাড়া দিতে। আর তোলা তুলতে ব্যস্ত। যদিও নীচের তলার পুলিশ সেই টাকা পাননা।
এদিন শুভেন্দু ফের বলেন, বর্ধমানের জেলাশাসক এবং বাঁকুড়ার জেলাশাসকের স্বামীরা বালির টাকা তুলে কলকাতায় পাঠান। আমার কাছে প্রমাণ আছে। এদিনই কলকাতায় পার্কিং ফি বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সে সম্পর্কে শুভেন্দু বলেন, রাজ্য থেকে ৫জন ব্যবসায়ী এখান থেকে বিজনেস সেণ্টার বন্ধ করে নাগপুর আর ভূবনেশ্বরে নিয়ে যেতে চাইছে এই পার্কিং ফির জন্য। অন্যদিকে, এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, চাকরী দুর্নীতি থেকে কয়লা, বালি, পাথর এমনকি প্রকৃতির সম্পদও চুরি করেছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। গোটা রাজ্যে রানী আর যুবরাজের-শাসন চলছে। বাংলা আবাস যোজনা থেকে গ্রামীণ সড়ক যোজনা সবেতেই দুর্নীতি। ১০০ দিনের জবকার্ড নিয়ে দুর্নীতি। তাই এই সরকার আর নয়।
শুক্রবার বর্ধমানের বড়নীলপুর মোড় থেকে কার্জনগেট পর্যন্ত কৃষক মিছিলে পা মেলালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তাঁর পরণে ছিল ইংরাজীতে লেখা - নো ভোট টু মমতা লেখা গেঞ্জি। কার্জনগেটের প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের এই গেঞ্জির লেখা দেখিয়ে তিনি জনতার কাছে প্রশ্ন করেন – তিনি কি ভুল লিখেছেন? এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে কখনও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নামে সরাসরি আবার কখনও নাম না করে ভাইপোর নামে অভিযোগ তোলেন।
শিবপুর এবং বিষড়ার দাঙ্গা নিয়ে এদিন শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দায়ী করে বলেন উনিই দাঙ্গা বাধাচ্ছেন। এদিন শুভেন্দু বর্ধমানের এক রাইস মিল মালিকের নাম করে বলেন, উনি ভূয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে চাষীদের কাছ থেকে ধান বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। আর এই টাকা সরাসরি ভাইপোর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। আর ধান পৌঁছে গেছে কেষ্টর রাইস মিলে। ওই রাইস মিলের তা আগের খাদ্যমন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ট ছিলেন।
এরই পাশাপাশি এদিন শুভেন্দু বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়কের নাম করেই বলেন, এখানের একজন বিধায়ক সাইকেল নিয়ে ঘুরতেন। উনি ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআইএর কাছে কয়েকবার হাজিরা দিয়েছেন। উনিও বাঁচবেন না। সরাসরি রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের নাম করে বলেন উনি জোড়া চাকরি দিয়েছেন। ভাবখানা এমন যে ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেন না। তিনি বলেন, কে একজন উত্তম আছে। বড় নেতা। জামালপুরে মেহমুদ। সব জানি।
শুভেন্দু বলেন, পাশের জেলা পর্যন্ত এসে গেছে সিবিআই ইডি। এরপর তো বর্ধমানের পালা। কেউ বাঁচবে না।তিনি বলেন, কেষ্টর তিহার জেলে গিয়ে ধোঁয়া বেড়িয়ে গেছে। কেষ্ট তিহারে গণ ফট্। আগামী ১৭ এপ্রিল কাটোয়ায় সভা করতে আসছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। শুভেন্দু বলেন, উনি একজন মদ ব্যবসায়ী রাসবিহারীর মিটিং করতে আসছেন। আমিও আসছি জামালপুরে। উনি (অভিষেক) যা বলবেন তার জবাব দেব জামালপুরের মিটিং থেকে। এদিন শুভেন্দু বলেন, পঞ্চায়েতে জোর লড়াই হবে। গণতন্ত্র রক্ষা করতে রক্ত দিতেও প্রস্তুত। ভদ্রভাবে ভোট হতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊