পুরাতন ঐতিহ্য মেনে আজও কেশিয়াড়ায় গ্রামের ঢাকিদের নিয়েই বিদায় জানানো হয় উমাকে
উত্সব মুখর ভোজনরশিক বাঙালির কাছে যতই উত্সব আসুক না কেন, বাংলা-বাঙালির মন চাই আরো উত্সব আরো আনন্দে গা ভেজাতে ।প্রাচীন যুগ থেকে সময়ের সাথে সভ্যতার বিবর্তনের হাত ধরে হাটতে হাটতে আমরা আজ হেটে চলেছি একবিংশ শতাব্দীর বুকে । আর এই বিবর্তনের পথে আজ পড়ে আছে শুধু খাঁটি জিনিসের পদ চিহ্ন মাত্র,বাকি সবই গেছে আধুনিকতার অন্দরমহলে। পুজো পার্বণে বেড়েছে অনুষ্ঠানিকতা আড়ম্বরতা।
ডিজে, রঙিন আলোর রকমফেরতা, সাউন্ড সিস্টেমের শব্দে ঢাকা পড়েছে পৌরানিকত্ত্বের মৃদু-মন্দ কণ্ঠ । একবিংশ শতকের বুকে দাঁড়িয়ে ডিজে, সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে ভোগবিলাসই যেন এখন যুগের ট্রাডিশন । কিন্তু সংবাদ একলব্যের ক্যামেরায় একটু অন্যরকম ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটির কেশিয়াড়া গ্রামের দুর্গা প্রতিমা বিষর্জ্নের সময় । যদিও দশমীর দিন ঘট বিসর্জ্ন করা হলেও মঙ্গলবার রজনী ছিল দুর্গা প্রতিমা বিষর্জনের গ্রাম ষোলোআনার নির্ঘণ্ট সময় ।
দেড় শতাব্দী প্রাচীন কেশিয়াড়া গ্রাম্য ষোলোআনার দুর্গাপুজো। মূলত ১৫০ বছর আগে গ্রামেরই বাসিন্দা পাড়ের ঠাকুর নামক এক ব্রাহ্মণ এই পুজোর সূচনা করেন। তখন থেকেই এখানে শুরু হয় গ্রামের বাদ্যকর পড়ার ঢাকিদের নিয়ে পুজোর চল।
দেড় শতাব্দী ধরে আজও সেই পৌরানিকত্ত্বকে পাথেয় করে গ্রামের ঢাকিদের নিয়ে ঢাকের ড্যাং কুরা কুর বোলে এবং বলো দুর্গা মাইকি ধ্বনিতেই বিসর্জ্ন দেওয়া হয় এখানকার গ্রাম্য ষোলোয়ানার দুর্গার প্রতিমাকে।গ্রামের ঢাকিরা দুর্গা পূজোকে কেন্দ্র করে একটু বাড়তি রোজগারের আশায় ঢাক বাজাতে ছোটে ভিন রাজ্যে । তাই প্রথাগত ভাবে দশমীতে মায়ের বিষর্জ্নের রীতি থাকলেও, দশমীর দিন থেকে বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতেই হয় ঢাকিদের ফিরে আসার জন্য । এবং তারা ফিরে এলে গ্রামের ঢাকিদের নিয়েই সকলে মত্ত হয় উমা বিসর্জনে । পিছনে পড়ে থাকে আধুনিক সুউচ্চ সাউন্ড সিস্টেমের মতো শব্দ দূষণকারী যন্ত্রগুলি।
বিসর্জনের পর গ্রামসহ আশেপাশের ১০-১২ টি গ্রামের মানুষ সমবেত হন খিচুরী প্রসাদ গ্রহণে ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊