ডিভিসির ছাঁয়ে নষ্ট জমি,নায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনে সামিল ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা
রঞ্জিত ঘোষ ,বাঁকুড়া
উত্তর বাঁকুড়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পাঞ্চল বলতে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কে বোঝায়। কয়লা পুড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, কিন্তু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে নির্গত ছাই একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী সমগ্র এলাকা জুড়ে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই জল ধরে রাখার জন্য দুটি বিশাল অ্যাস পণ্ড তৈরি করা হয় কারখানার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে। কিন্তু সেই অ্যাসপণ্ডের পাড় বহুবার ভেঙ্গে গিয়ে পার্শ্ববর্তী লটিয়াবনী, নিত্যানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু চাষীর চাষযোগ্য জমি ছাই এর নীচে চাপা পড়েছে। ফলে জমি হারিয়ে সারা বছরের ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে কৃষকদের।
এছাড়াও রাজ্য সেচ দপ্তরের দুটি জলাধার রাধাকৃষ্ণপুর এবং জামগাড়ীর মধ্যবর্তী স্থলে জলাধার এবং সারাঙ্গপুর ও নিত্যানন্দপুর গ্রামের জলাধার ছাই পড়ে বুজে রয়েছে। অ্যাসপণ্ডের ছাই উড়ে গিয়ে দূষিত করছে বাতাসকে, মানুষ চর্মরোগ, চক্ষুরোগ সহ একাধিক সমস্যায় ভুগছেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিলও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ।
এবিষয়ে এলাকার মানুষজন, কৃষকেরা এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু বারংবার প্রশাসন এবং নেতাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। হয়নি কোনো সুরাহা।
ফের আন্দোলনের পথে নামলো লটিয়াবনী এবং নিত্যানন্দপুর অঞ্চল কৃষক কল্যান সমিতি। শুক্রবার গঙ্গাজলঘাটি সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যলয়ের সামনে তাঁরা বিক্ষোভে সামিল হোন। গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের মূল প্রবেশ পথ আটকে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য তারা ডিভিসি কতৃপক্ষ ২০১৮ সাল থেকে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি বলে অভিযোগ করেন। একটি প্রতিনিধি দল গঙ্গাজলঘাটি সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাজাগোপাল মুখার্জির কাছে তাদের দাবী সম্মিলিত পত্র তুলে দেন।
আগামী ৭দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হলে আগামী দিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হয়ে ডিভিসি এমটিপিএস কারখানার সব গেট বন্ধ করার হুসিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকার যখন একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন, তখন এই সমস্ত এলাকার কৃষকরা চোখের জল ফেলছেন। তাদের এই আন্দোলনের কথা তারা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।
তবে এবিষয়ে গঙ্গাজলঘাটি সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাজা গোপাল মুখার্জি জানান কৃষকদের সকল দাবি পত্র ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাটছে পাঠানো হয়েছে। এখন এ বিষয়টি সম্পূর্ণ ডিভিসি কর্তৃপক্ষের অধীনে রয়েছে।
আগামী ১লা জুন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার সতীঘাট এর জনসভা করবেন তার আগে কৃষকদের এই আন্দোলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊