budget 2022 news: Department of Education in the budget 2022

school
                      budget 2022 news


বাজেট অধিবেশনে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে তাতে বিদ্যালয় শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা নিয়ে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কি কি জানালেন, আসুন জেনে নেই। 

বিদ্যালয় শিক্ষা

মানবসম্পদ উন্নয়নের সুদৃঢ় ও স্থায়ী শ্রীবৃদ্ধির প্রতি লক্ষ্য রেখে শিক্ষা ক্ষেত্রে গুণমান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এবং উত্তরােত্তর বৃদ্ধি সামাল দিতে ২০১১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৭,০৮৫টি নতুন বিদ্যালয় ভবন এবং ২,০৩,২০৮টি অতিরিক্ত শ্রেণি কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৪০,৪৭২টি ছাত্রী শৌচালয়, ২৪,০০১টি ছাত্র শৌচালয় এবং ৭,১৯২টি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের (CWSN) শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। বিগত সাড়ে দশ বছরে রাজ্য সরকার ৯.৭৩ কোটিরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে বিনামুল্যে বিদ্যালয়ের পােশাক বরাদ্দ করেছে, তৎসহ প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক বরাদ্দ করা হয়েছে।

২০২১ সালের ৩০শে জুন থেকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প চালু করা হয়েছে। উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরের শিক্ষালাভের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা প্রযােজ্য। ২০২১-২২ সালে এই প্রকল্পের অধীনে ২০,০০০ জন এর কাছাকাছি শিক্ষার্থী ৪১২,৮১৯ কোটি টাকা শিক্ষাঋণ রূপে পাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে এবং বাকি ঋণের আবেদনের অনুমােদনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, ‘তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের অধীনে সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ই-লার্নিং মাধ্যমে পড়ার সুন্য ট্যাব বা স্মার্টফোন কেনার জন্য এককালীন ১০,০০০ টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ সালে এই প্রকল্পের অধীনে ৮,৭২,৫৩৬ জন শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করেছে।


কোভিড মহামারীর আবহে বিদ্যালয় শিক্ষাবিভাগ শিক্ষার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নানারকম বিকল্প মাধ্যমের ব্যবস্থা করে চলেছে। এরমধ্যে উল্লেখযােগ্য হল— (১) সক্রিয় অনুশীলনের মাধ্যমে শেখা (Learning through activity task) (২) ই-লার্নিং (৩) বাংলার শিক্ষা ক্লাসরুম (৪) প্রােগ্রাম ভিডিও (৫) মডেল প্রশ্নপত্র এবং (৬) বাংলার শিক্ষা দুরভাষ।

ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরিয়ার পাের্টাল নামে একটি ওয়েবসাইটের প্রবর্তন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা আগামীদিনে কেরিয়ার সম্ভাবনার সুপরামর্শ, উচ্চশিক্ষা, প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং মেধাবৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারিবে।

রাজ্যের ১০০ শতাংশ সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়েই মিড-ডে-মিল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এর ফলে ১.১৫ কোটিরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী বর্তমানে এই কর্মসূচির আওতায় এসেছে। মহামারীর আবহে তাদের শুকনাে খাদ্যসামগ্রী বণ্টন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে সমস্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে সাবান, মাস্ক, হাতশুদ্ধি (Sanitizer) ইত্যাদিও দেওয়া হচ্ছে।

আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে এবং তাদের বিদ্যালয়মুখী করতে বর্তমান আর্থিক বর্ষে ১,৪৩৯টি অতিরিক্ত ক্লাসরুম তৈরি করা হয়েছে এবং ৪২৩টি বিদ্যালয়কে ল্যাবরেটরি অনুদান দেওয়া হয়েছে।

ICT @ School Prograrmine –কর্মসূচির অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে ৯,৩১০টি বিদ্যালয়কে এর আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

বিশেষভাবে সক্ষম (CwsN) শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বাড়ানাের লক্ষ্য নিয়ে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল মাধ্যমের পুস্তক এবং ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়া অক্ষরের পুস্তক মিলিয়ে মােট ১৬,০০০ পুর্তক বিতরণ করা হয়েছে। ৫৩,৬৯৮ জন বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রীদের ছাত্রবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে ২৯,১৪৯ জন বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীকে পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য সামগ্রীর জন্য অর্থ সাহায্য করা হচ্ছে।

সম্প্রতি নীতি আয়ােগের ফাউন্ডেশন লিটারেসি নিউমেরাসিইনডেক্স’সুচকেরঅধীনে বৃহত্তর রাজ্যগুলির তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা প্রসারে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছে।

রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ নিজের তত্ত্বাবধানে তৈরি 'বাংলার শিক্ষা পাের্টাল এবছর স্কচ গােল্ডেন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।


উচ্চশিক্ষা

বিগত ১০ বছরে রাজ্যবাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ প্রায় ৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০১০-১১ বর্ষে বাজেট রাদ্দ ছিল ১২০ কোটি টাক্স, সেখানে ২০২১-২২ বর্ষে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ৯৯২ কোটি টাকা। বিগত ১০ বছরে রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে ৪২, হয়েছে। যার মধ্যে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার পােষিত এবং ১১টি বেসরকারি

আমাদের রাজ্যে ৫০৯ টি সরকারি এবং সরকার পােষিত কলেজ রয়েছে। যার মধ্যে বিগত ১০ বছরে ৫১টি নতুন কলেজ গঠিত হয়েছে। যার ফলে উচ্চশিক্ষায় আসন সংখ্যা প্রভূত বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০১০-১১ সালে ছাত্র-ছাত্রীসংখ্যা ১৩,২২৪ লক্ষছিল, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে উচ্চশিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীসংখ্যা ২১.৬১ লক্ষে এসে দাঁড়িয়েছে।

স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপ প্রকল্পে ২০১০-১১ বর্যে বরাদ্দ ছিল ৩০.১০ কোটি টাকা এবং এতে ৭,৪২৩ জন ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পেয়েছিল। ২০২০-২১ বর্ষে এই প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়ে ২০০,৯৬ কোটি টাকা হয়েছে এবং এতে ২,১১,৮৯১ জন ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হয়েছে।

২০২১-২২ বর্ষেস্বামী বিবেকানন্দ মেরিটকাম-মিনস স্কলারশিপ পাের্টাল ১৬.১১.২০২১ তারিখে চালু হয়েছে। এখানে দুঃস্থ যেসমস্ত পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, সেইসব পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন করার যােগ্য। এখনও পর্যন্ত ৬,১৯,৫৫৪ জন ছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে আবেদনপত্র জমা করেছে।


রাজ্য সরকার ২০২১ সালের ৩০ জুন ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প চালু করেছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার জন্য রাজেরঅভ্যস্তরে, অন্যরাজ্যে এমনকি বিদেশে শিক্ষারত অবস্থাতেও এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারে। ১,১২,৭৪৫ জন ছাত্রছাত্রীরআবেদনপত্র জমা পড়েছে, যারমধ্যে ১,০৭,৮৯৯ সংখ্যক আবেদনকারীর আবেদন ব্যাংকে প্রেরণ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলি ২০,০০০টি আবেদনকারীকে ৪১২.৮৯ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরকরেছে।