Twin Towers attack টুইন টাওয়ার হামলার দুই দশক - কী ঘটেছিল সেদিন?
১১ সেপ্টেম্বর মানেই যেনো টুইন টাওয়ার ! এক লহমায় মনে পড়ে যায় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখের কথা। নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নামের সুবিশাল ভবন দুটো ধ্বংসের দৃশ্য এখনো ভেসে বেড়ায় ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।
নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেয়া প্রজন্মের কাছে ভয়ংকর আতংক এবং নস্টালজিয়ার দগদগে উদাহরণ তো বটেই, পাশাপাশি গোটা দুনিয়ার জন্যও সার্বজনীন ঘটনা হিসেবে দাগ কেটে আছে টুইন টাওয়ার হামলা।
পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব ভয়ংকর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে টুইন টাওয়ার হামলার কথা সবার আগেই চলে আসে। যেজন্য আজও মানুষ জানতে চায়, কী ঘটেছিলো সেদিন? কেনই বা ঘটেছিলো? কারা ছিলো এই নগ্ন হামলার পেছনে?
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, আর দশটি স্বাভাবিক দিনের মতোই নিউ ইয়র্কের ব্যস্ত একটি দিনের শুরু হয়েছিল। মার্কিন বার্তা সংস্থা CNN এক প্রতিবেদনে জানায়, সেদিন সকালে ১৯ জন মিলে জেট ফুয়েল ভর্তি স্থানীয় সেবাদানকারী ৪টি বাণিজ্যিক বিমান ছিনতাই করে।
ভার্জিনিয়ায় অবস্থিত মার্কিন জাতীয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) রুমে তখন স্বাভাবিক ব্যস্ত সময় পার করছিলেন অপারেটররা। বিমানে ঠাসা মার্কিন আকাশে বোস্টন থেকে লসএঞ্জেলেসগামী ছোট্ট বাণিজ্যিক বিমান আমেরিকান এয়ারলাইনের ফ্লাইট ১১-এর ককপিট থেকে একটা অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পান এটিসির দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা। বিমানটির সঙ্গে কিছুক্ষণ পরই যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেন ওই অপারেটর। স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে বিমানটির অবস্থান হারিয়ে যাওয়া এবং একটা সম্ভাব্য বিমান ছিনতাইয়ের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান তিনি। তারা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখে আপডেট জানানোর নির্দেশ দেন অপারেটরকে। রাজ্যের এটিসিতে যখন ‘ফ্লাইট ১১’-এর তল্লাশি চলছিল, তখনই বোস্টন থেকে লসএঞ্জেলেসগামী আরও একটি বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে এটিসি।
এটিসি কক্ষে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই টেলিভিশনে ভেসে আসে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে বিস্ফোরণের ঘটনা। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে নিউ ইয়র্কের লোয়ার ম্যানহাটনে অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের ১১০ তলা উচ্চতার টুইন টাওয়ারের নর্থ ভবনে আঘাত হানে কিছু একটা। পরে জানা যায়, ৫ ছিনতাইকারীসহ ৮১ জনের আমেরিকান এয়ারলাইনসের ‘ফ্লাইট ১১’ সরাসরি ঢুকে যায় গগনচুম্বী ভবনটিতে। আচমকা এমন হামলায় যখন হতবাক এটিসি, তখনই তারা সরাসরি ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ‘ফ্লাইট ১৭৫’-এর হামলার সাক্ষী হন। প্রথমটির ঠিক ১৭ মিনিটের মাথায় ‘ফ্লাইট ১৭৫’ আঘাত হানে টুইন টাওয়ারের দক্ষিণ ভবনে। স্তম্ভিত হয়ে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো বিশ্ব। ঘোর কাটতে না কাটতেই, এটিসি-তে খবর আসে ভার্জিনিয়া থেকে লসএঞ্জেলেসগামী আমেরিকান এয়ারলাইনসের ‘ফ্লাইট ৭৭’ নিখোঁজের কথা। ততক্ষণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী দুটো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দিয়েছে নিখোঁজ বিমানের তল্লাশিতে। যোগাযোগহীন হয়ে পড়ায় বিমানটির অবস্থান জানতে পারছিল না এটিসি কর্র্তৃপক্ষ। সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে ওয়াশিংটনে অবস্থিত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনে আঘাত হানে ৫ ছিনতাইকারীসহ ৫৮ জনের ‘ফ্লাইট ৭৭’। এদিকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দুটো আমেরিকার ব্যস্ততম আকাশে প্রবেশের কোনো সুযোগই পাচ্ছিল না।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়, এটিসির জন্য আরও আতঙ্ক অপেক্ষা করে আছে। ৪ জন মিলে ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের আরও একটি বিমান ছিনতাই করেছে। ছিনতাইকারী, পাইলট, ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও যাত্রী মিলিয়ে ৩৭ জনকে নিয়ে পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভিলের পাশের একটি মাঠে ১০টা ৩ মিনিটে বিধ্বস্ত হয় ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ওই বিমানটি (ফ্লাইট ৯৩)। যেখান থেকেও কেউ বাঁচতে পারেনি। পরে ধারণা করা হয়, এই বিমানটিও ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল, তবে বিমানের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে সেটা পথিমধ্যেই বিধ্বস্ত হয়।
প্রথম হামলার ঠিক ১০২ মিনিট পর অর্থাৎ ১০টা ২৮ মিনিটে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও দর্শনীয় স্থাপত্যের ১১০ তলার টুইন টাওয়ার ধসে যায়। কিছুক্ষণ পর বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের ৪৭ তলার আরও এক ‘ভবন ৭’ মাটিতে ধসে পড়ে। মাত্র ১০-১২ সেকেন্ডের মধ্যে ধসে যায় টুইন টাওয়ার। যেন ডিনামাইট বা শক্তিশালী বিস্ফোরক দিয়ে ভবন দুটোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ঘটনার ৩ মাস পর ১৩ ডিসেম্বর মার্কিন প্রশাসন একটি ভিডিও টেপ প্রকাশ করে, যেখানে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
source: deshrupantor
2 মন্তব্যসমূহ
মানব ইতিহাসের পাতায় এক অন্যতম ভয়াবহ দিন
উত্তরমুছুন2021 সালে 11 সেপ্টেম্বর স্মরণ করে দেয় এক ভয়াবহ দিনকে ।
উত্তরমুছুনThank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊