বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠা দিবস পালন জেলা জুড়ে





তমলুক সুজিত মণ্ডল :


বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ৫২তম প্রতিষ্ঠা দিবস। সমিতি তার জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষা ও শিক্ষকদের উপর সমস্ত প্রকার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দীর্ঘ ১৯ বছরের আন্দোলনে ইংরাজি চালু, জানুয়ারি - ডিসেম্বর শিক্ষাবর্ষ পুণ:প্রবর্তন, শিক্ষকদের মাস পয়লা বেতন, অবসরের সঙ্গে সঙ্গে পেনশন প্রদান, E S I প্রত্যাহার , পি টি টি প্রশিক্ষিতদের চাকুরী, সহ বহু দাবি আদায় করেছে। চতুর্থ শ্রেণীর শেষে বৃত্তি পরীক্ষার মতো ঐতিহাসিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে । দীর্ঘ লকডাউনের মধ্যেও কোভিড স্বাস্হ্যবিধি মেনে স্কুল চালু, ছাত্র-ছাত্রীদের দু'বেলার হিসেবে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ, উন্নত মানের 'মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক' প্রদান ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আম্ফান, ইয়াস ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের ছাত্রছাত্রীদের হাতে পাঠ্য ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার মতো সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।



প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সারা রাজ্যের মত পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও এগরা, বাজকুল, হলদিয়া ,তমলুক চারটি জায়গায় সমিতির পতাকা উত্তোলন এবং সভা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বত্র সভায় নেতৃবৃন্দ সমিতির দীর্ঘ আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা বলেন, "টালবাহানা না করে ভারতবর্ষের বেশিরভাগ রাজ্যের ন্যায় এ রাজ্যেও পূজোর পরে নয়, এখনই স্কুল চালু করতে হবে।"


সেই সঙ্গে তিনি এই দাবিতে সর্বস্তরের ছাত্র ,শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গকে আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।



পাশাপাশি তিনি স্কুল চালু করতে সরকারের সীমাহীন টালবাহানা এবং শিক্ষকদের উপর নানান আক্রমণ ও আন্দোলনের অজুহাতে অনৈতিক বদলির প্রতিবাদে আগামী ৫সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান বয়কট করে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের কর্মসূচির কথা জানান।



সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, "সমিতির দীর্ঘ ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে রাজ্যের পাশাপাশি এ জেলায় শিক্ষকদের বদলি , জেলার অভ্যন্তরে সমস্ত শিক্ষকের ডি এল এড ট্রেনিং এর ব্যবস্থা , বি এড ডিগ্রীপ্রাপ্ত শিক্ষকদের স্পেশাল স্কোর্স চালু ইত্যাদি নানান দাবি আদায় সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত শূন্যপদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ,সুদসহ পি এফ এর হিসাব প্রদান এবং অনলাইন প্রক্রিয়া চালু ,হয়রানি বন্ধ করে সমস্ত রকমের এরিয়ার প্রদান সার্ভিস বুক চালু এবং নিয়মিতকরণ,এস আই- ডি আই-কাউন্সিল অফিসের শূন্যপদ পূরণ, ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলন চলছে। "



বিভিন্ন স্থানে সভায় নেতৃত্ব দেন তমলুকে জেলা সহ সম্পাদক সৌমিত্র পট্টনায়েক, সুবল সামন্ত, বর্ষীয়ান শিক্ষক অমল ব্যানার্জী, হলদিয়ায় সমিতির রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মেঘনাথ খামরই, রাজ্য কমিটির সদস্য যথাক্রমে নিমাই পটিদার, রুবি সানা(গিরি), সুদীপ্ত সাহু, বাজকুলে সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য সৌমেন প্রধান, এগরায় জেলা সভাপতি গোকুল মুড়া সহ অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।