অনির্দিষ্ট কালের জন্য নার্সেস ইউনিটি'র নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের বেতন বঞ্চনা নিরসনের আন্দোলন

অনির্দিষ্ট কালের জন্য নার্সেস ইউনিটি'র নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের বেতন বঞ্চনা নিরসনের আন্দোলন 

nurses unity



স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ডিপ্লোমা প্রাপ্ত নার্সিং কর্মচারীদের ডিপ্লোমা প্রাপ্ত হিসাবে বেতন কাঠামাে নির্ধারণ হয়নি। বেতন কমিশন যেমন বিজ্ঞানসম্মত, চুক্তিভিত্তিক, মর্যাদার বেতন কাঠামাের সুপারিশ করেনি, তেমনি একের পর এক রাজ্য সরকারও তাদের ডিপ্লোমা প্রাপ্ত হিসাবে গণ্য না করে বেতন কাঠামােতে বঞ্চিত করে চলেছে। এই বঞ্চনা কেবলমাত্র জি. এন. এম' ডিপ্লোমা নার্সদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। একদিকে কমুনিটিতে দায়িত্ব প্রাপ্ত এ.এন.এম (আর) থেকে পি.এইচ.এন, ডি,পি.এইচ, এন অন্যদিকে স্কুল-কলেজে টিচার, লেকচারার, হাসপাতালে সিষ্টার ইনচার্জ, ডেপুটি নার্সিং সুপার, এমনকি নার্সিং সুপারও বঞ্চনার শিকার। -এমনই অভিযোগে আজ সারাদিন উত্তাল SSKM . এসএসকেএমে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন নার্সরা। যোগ্যতা অনুযায়ী তাঁদের বেতন ঠিক করতে হবে। এই দাবিতেই তাঁরা অবস্থানে বসে বিক্ষোভ দেখান।




নার্সেস ইউনিটের (Nurses Unity) সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় জানান- "শিক্ষাগত যােগ্যতা, প্রশিক্ষণকাল, অভিজ্ঞতা ও কাজের দায়িত্বের উপর ভিত্তি করে বেতন কাঠামাে নির্ধারণের নীতি নার্সিং কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কার্যকরী করা হয়নি, ফলে বেতন বঞ্চনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এই বঞ্চনার মধ্যে দিয়ে নার্সিং পেশার প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়। বেতন কমিশন ও রাজ্য সরকার বেতন বঞ্চনা করে নার্সিং কর্মচারীদের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদাকে যেমন ক্ষুন্ন করেছে তেমনি সমগ্র নার্সিং পেশার গুরুত্বকে অস্বীকার করেছে।"

nurse




সভানেত্রী পার্বতী পাল বলেন- "নার্সিং কর্মচারীর প্রতি সরকারের এই অবমূল্যায়ন ও অমর্যাদাকর দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে নার্সেস ইউনিটি' বিগত সি.পি.এম ফ্রন্ট সরকারের উচ্চ আধিকারিক ও মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ করে। তাঁরা দাবির ন্যায্যতা স্বীকার করলেও তা পূরণ করেননি। | বর্তমান তৃণমূল সরকারের শাসনকালে নার্সেস ইউনিটি'-র নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে ২০১১ সালের ৩০ মে, ৯ জুন, ২ সেপ্টেম্বর, ১৮ ডিসেম্বর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নিকট ডেপুটেশন দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা ২০১৪ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে ৭ মার্চ, ৩০ আগষ্ট, ২০১৯ সালে ২৮ আগষ্ট একইভাবে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নিকট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দাবি সহ বেতন বঞ্চনা নিরসন করে ন্যায়সঙ্গত বেতন কাঠামাের দাবিপত্র পেশ করি। বেশির ভাগ সময়ই মাননীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে আমাদের আলােচনা হলেও, আজও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পূরণ হয়নি। বেতন বঞ্চনা নিরসনের দাবিতে ১৯৮৬ সাল থেকেই সরকারি উচ্চ আধিকারিকদের নিকট ডেপুটেশন ও বিক্ষোভ মিছিল সহ অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়ে চলেছি।"


তিনি আরও জানান- " সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৯৮৬ -র তৃতীয় বেতন কমিশন থেকেই প্রত্যেক কমিশনের নিকট স্মারকলিপি পেশ এর পাশাপাশি শুনানীতে অংশগ্রহণ করে দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। কিন্তু, ডিপ্লোমা প্রাপ্ত নার্সিং কর্মচারীদের শিক্ষাগত যােগ্যতা ও প্রশিক্ষণকাল, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার থেকে বেশী হলেও প্রত্যেক বেল। কমিশনই নার্সদের ধারাবাহিকভাবে বেতন বঞ্চনা অব্যাহত রেখেছে। এমনকি, অন্যান্য ডিপ্লোমা প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় নার্সিং কর্মচারীরা অনেক বেশি বঞ্চিত।"


দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সম্প্রতি রাজ্যের অন্যতম এস,এস,কে, এম হাসপাতালে ২০১৯ সালে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নার্সেস ইউনিটি' অবস্থান বিক্ষোভের সামিল -তাতেও কোন সুরাহা হয়নি। এভাবে একাধিক আন্দোলন হলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। তাই এবার 'নার্সেস ইউনিট' অনির্দিশষ্ট কালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।


নার্সেস ইউনিটি'র নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের বেতন বঞ্চনা নিরসনের আন্দোলন জয় লাভ করা না পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. বেতন বঞ্চনা নিরসন আন্দোলন জয় লাভ না করলে এই আন্দোলন চলবে।।

    উত্তরমুছুন

thanks