'তৃণমূল আর দিদির দল নয়'-ফের বিস্ফোরক কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী
ফের বিস্ফোরক কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। জনপ্রিয় সোশ্যাল নেট ওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকে তৃণমূল নেত্রীর ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর একটা ফেসবুক পোস্টে দল ছাড়ার কথা উঠে আসে। স্পষ্ট করে জানান, এখনই রাজনীতির ময়দান থেকে বিদায় নিচ্ছেন না তিনি। তবে কোন দলে যোগ দিচ্ছেন বা তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী হতে চলেছে তা নিয়ে কিছুই জানাননি। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ ২২ বছর অসম্মানিত হয়েও তৃণমূলে আছেন তিনি। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বিশ্বাস-ভরসা রেখেই এতদিন কাজ করে করেছেন। কিন্তু এখন তৃণমূল আর মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের দল নেই বলেই কটাক্ষ করেছেন তিনি।
ফেসবুকে মিহির গোস্বামীর দাবি, তিনি দলের সাংগঠনিক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ৬ সপ্তাহ পরেও দলনেত্রী যোগাযোগ করেননি। এর থেকেই স্পষ্ট, দলের ক্ষমতা দলনেত্রীর হাতে নেই। ২ অক্টোবর কোচবিহার জেলা তৃণমূলের ব্লক কমিটি ঘোষণার পর অসন্তোষ প্রকাশ করে দলের যাবতীয় সাংগঠনিক পদ ছেড়ে দেন তিনি। আর আজকের এই পোস্ট ভাইরাল হতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এদিনের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, "বহুকাল পরে এবার এক নিস্প্রভ দীপাবলী দেখে মন বিষণ্ণ হয়েছিল। তেমনই ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই, যে দলের অভিধানে ‘সম্মান’ বলে শব্দটিই অনুপস্থিত সেই দলে বাইশটা বছর কাটিয়ে দিলাম! কী করে সম্ভব হল, কেন তা সম্ভব হল এসব প্রশ্ন উঠে আসে নিজের মনেই! উত্তর একটাই খুঁজে পাই, দিদি! দলের ভেতর অজস্র অপমান অবমাননা ক্রমাগত সহ্য করে গিয়েছি অকারণে, চুপ করে থাকার জন্য শুভানুধ্যায়ীরাও বিরক্ত হয়েছেন বারবার। কিন্তু আমার উত্তর একটাই ছিল, দিদি! যার উপর বিশ্বাস-আস্থাতেই এতদিন টিকে ছিলাম।
কিন্তু ঊনিশশো ঊননব্বই সাল থেকে তাঁর নেতৃত্ব মেনে দীর্ঘ তিরিশ বছর অতিক্রম করার পর হঠাৎ বোধগম্য হয়েছে, এ দল এখন আর আমার দিদি-র দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই 'দিদির লোক' এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন। অন্যায্য সবকিছু মেনে নিয়ে 'যো হুজুর' করে টিকে থাকতে পারলে থাকো, নয়ত তফাৎ যাও।
সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ছয় সপ্তাহ কেটে গেছে। এই বিয়াল্লিশ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। বহু পুরনো রাজনৈতিক বন্ধুর ফোন পেয়েছি রাজ্যের বাইরে থেকেও। কেউ অফার দিয়েছেন, কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ শুধু ভালবাসা দিয়েছেন। সতীর্থ অনেক সহকর্মী নেতার ফোন এসেছে বাংলার নানা প্রান্ত থেকে, কলকাতা থেকে, সবার ফোন ধরা হয়ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত ছয় সপ্তাহে খোদ নেত্রীর কাছ থেকে কোনও ফোন আসেনি। কোনও বরখাস্তনামা কিংবা বহিস্কারের নির্দেশও আসেনি তাঁর কাছ থেকে।
আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। শ্যামা মায়ের আরাধনালগ্নে আমার এই অনুমান আরও দৃঢ় হয়েছে। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করাটাই কি স্বাভাবিক নয়?"
বহুকাল পরে এবার এক নিস্প্রভ দীপাবলী দেখে মন বিষণ্ণ হয়েছিল। তেমনই ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই, যে দলের অভিধানে ‘সম্মান’ বলে...
Posted by Mihir Goswami on Monday, 16 November 2020
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊