চলে গেলেন ভালোবাসার কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত

“ভগবানের গুপ্তচর মৃত্যু এসে বাঁধুক ঘর
ছন্দে, আমি কবিতা ছাড়ব না”!

২০২০ বিষাদে ভরা তা বলাই বাহুল্য। একে একে বহু বিশিষ্ট জনকে চোখের জলে বিদায় জানাতে হয়েছে। এবার চলে গেলেন ভালবাসার কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। ৮৭ বছর বয়সে জীবনের ইতিহাসের পাতা থেকে বিদায় নিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে জার্মানিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।


১৯৩৩ সালের ৬ অক্টোবর জন্ম অলোকরঞ্জনের। শান্তিনিকেতন ও সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়াশোনা করেছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে প্রায় দেড় দশক অধ্যাপনা করেন তিনি। ফেলোশিপ নিয়ে দেশ ছেড়ে জার্মানি চলে যান তিনি। গত ৪০ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন তিনি। জার্মানিতে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। বয়সজনিত কারণে নানান সমস্যায় ভুগলেও প্রতি বছরেই কলকাতায় আসতেন তিনি। তাঁর সাহিত্য সৃষ্টি অনবরত চলছিল। 


অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'যৌবনবাউল' ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। সারাজীবন ধরে রচনা করেছেন বিপুল সাহিত্যসম্ভার। বাংলা ভাষায় ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ রয়েছে তাঁর। ফরাসি ও জার্মান ভাষার একাধিক উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন তিনি। 'নিষিদ্ধ কোজাগরী', 'রক্তাক্ত ঝরোখা', 'ছৌ-কাবুকির মুখোশ' তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। লিখেছেন 'জীবনানন্দ'-এর মতো অপূর্ব গদ্যগ্রন্থ। 'শতভিষা' ও 'কৃত্তিবাস' লিটল ম্য়াগাজিনেও লিখে চলেছেন অবিরাম।



আনন্দ পুরস্কার, সুধা বসু সম্মান, প্রবাসী ভারতী সম্মান, রবীন্দ্র পুরস্কার, মরমী করাত কাব্যগ্রন্থের জন্য় ১৯৯২ সালে পান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। 


'দেবীকে স্নানের ঘরে নগ্ন দেখে'র বর্ণময় কবি চলেও গেলেও রয়ে গেল তাঁর সৃষ্টি যা নিয়েই বাঁচতে হবে বাঙালিকে। তাঁর মৃত্যু সংবাদে শোকস্তব্ধ পাঠক সমাজ।