শিক্ষকের চেষ্টায় ফেসবুকের সহায়তায় প্রাণে বাচলেন মূমূর্ষ রোগী
শচীন পালঃ ফেসবুক পোস্টে রেসপন্স করে ওড়িশায় চিকিৎসাধীন রোগীকে রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন দুই যুবক দীপঙ্কর দাস অধিকারী ও প্রণব সামন্ত। এক শিক্ষকের উদ্যোগে অন্য সকলের সহযোগিতায় ফেসবুকের মাধ্যমে জরুরী অপরারেশনের প্রয়োজনে দু-ইউনিট রক্ত পেলেন ওড়িশার ভূবনেশ্বর এআইআইএমএসে চিকিৎসাধীন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং এলাকার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের পৌঢ় সুশান্ত মেইকাপ।
দিন কয়েক আগে ভূবনেশ্বরে বাবাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাওয়া সুশান্ত বাবুর ছেলে উত্তম মেইকাপ বাবার অপারেশনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায মারফত যোগাযোগ করেন মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের সদস্য, রক্তদান আন্দোলনের কর্মী, পেশায় চুয়াডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়ার সাথে। উত্তমবাবু সুদীপবাবুকে জানান তাঁর বাবার জন্য ভূবনেশ্বরে কমপক্ষে দু ইউনিট বি পজেটিভ রক্তের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
সুদীপবাবু উত্তমবাবুকূ আশ্বস্ত করেন এবং ফেসবুককে হাতিয়ার করে ডোনার খোঁজা শুরু করেন। তিনি নিজের প্রোফাইলের পাশাপাশি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বড় বড় ফেসবুক গ্রুপগুলোতে এবং সুবর্ণরৈখিক ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা বিষয়ক ফেসবুক গ্রুপ "আমরকার ভাষা আমারকার গর্ব" তে রক্তের চাহিদার কথা পোস্ট করেন। পাশাপাশি রক্তদানের সাথে যুক্ত বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন।মূললক্ষ্য ছিল স্থানীয় ভাবে ভুবনেশ্বরেই রক্ত যোগাড় করা। এই পোস্ট গুলো অনেক শেয়ার এবং কেউ কেউ নিজের মতো করে রি পোস্ট করেন।
শেষপর্যন্ত সুবর্ণ রৈখিক ভাষা ও সংস্কৃতি গ্রুপের সদস্য জামশেদপুরের বাসিন্দা রাজীব ভূঞ্যার পোষ্টের সূত্র ধরে ঝাড়গ্রাম জেলার ভূমিপুত্র এবং বর্তমানে কর্মসূত্রে ভূবনেশ্বরের বাসিন্দা রাজেশ তোরই জানান তিনি এক ইউনিট রক্তের ব্যবস্থা করে দেবেন। অন্যদিকে পূর্বে মেদিনীপুরের একটি গ্রুপে সুদীপ বাবুর করা পোস্টে রেসপন্স করে তমলুকের ভূমিপুত্র এবং কর্মসূত্রে ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা কটক হাইকোর্টের তরুণ আইনজীবী প্রণব সামন্ত জানান তিনি নিজে রক্তদানে আগ্রহী।
সেইমত সবরকম যোগাযোগ করে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ নাগাদ রাজেশ তোরাইবাবু সূত্রে এআইআইএমএসের ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খাকুড়দা মনোহরপুর এলাকার ভূমিপুত্র এবং কর্মসূত্রে ভূবনেশ্বরের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী দীপঙ্কর দাস অধিকারী।অন্যদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে রক্তদান করেন আইনজীবী প্রণব সামন্ত। সুদীপবাবু রক্তদানের এই "রূপকথার কাহিনী" সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে নেটিজেনেরা রক্তদাতাদের কুর্ণিশ জানিয়েছেন এবং এই কাজের সঙ্গে যুক্তদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊