না ফেরার দেশে চলে গেলেন ভারতের প্রথম মহিলা কার্ডিওলজিস্ট  





কোভিড আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ভারতের প্রথম মহিলা কার্ডিওলজিস্ট-হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শিবরামাকৃষ্ণা আইয়ার পদ্মাবতী (Dr Sivaramakrishna Iyer Padmavati)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। 

হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে ডাক্তার পদ্মাবতীই দেশে প্রথম কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট চালু করেন দিল্লির গোবিন্দ বল্লভ পন্ত হাসপাতালে। ১১ দিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন এই কিংবদন্তী চিকিৎসক। তড়িঘড়ি তাঁকে দিল্লির ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়, যে হাসপাতালটি ১৯৮১ সালে তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হল না, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন এই প্রথিতযশা চিকিৎসক। 


১৯১৭ সালের ২০ জুন বার্মাতে জন্মগ্রহন করেন শিবরামাকৃষ্ণা আইয়ার পদ্মাবতী। তাঁর তিন ভাই এবং দুই বোন।   দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান যখন বার্মা আক্রমণ করে, তখন প্রাণে বাঁচতে ভারতে চলে আসেন। 

তিনি রাঙ্গুনের মেডিকেল কলেজ, রেঙ্গুন থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে লন্ডনে চলে যান, সেখানে তিনি লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স থেকে এফআরসিপি পেয়েছিলেন, তারপরে এডিনবার্গের রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স থেকে এফআরসিপিই হন। এখানে জাতীয় হার্ট হাসপাতালএবং লন্ডনের কুইন স্কয়ার জাতীয় হাসপাতালে  কাজ করার সময় তিনি কার্ডিওলজিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

এরপরে, তার এফআরসিপি শেষ করার পরে, তিনি তিন মাসের জন্য সুইডেনে চলে যান, যেখানে তিনি  কার্ডিওলজি কোর্স করেন। এদিকে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ বাল্টিমোরের জনস হপকিনস হাসপাতালে ফেলোশিপের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং  নির্বাচিত হয়ে  বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হেলেন তৌসিগের সাথে অধ্যয়ন করতে গিয়েছিলেন। 

১৯৫২ সালে তিনি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে (হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়) যোগদান করেন, যেখানে তিনি আধুনিক কার্ডিওলজির অগ্রদূত ডঃ পল ডুডলি হোয়াইটের অধীনে পড়াশোনা করেছিলেন।

এরপর ধীরে ধীরে দেশের প্রথম মহিলা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠলেন ডাক্তার শিবরামাকৃষ্ণা আইয়ার পদ্মাবতী। 

তাঁর কৃতিত্বের জন্য ১৯৯২ সালে ডাক্তার পদ্মাবতী দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন। 

১৯৭০ সাল নাগাদ ডাক্তার পদ্মাবতী নিজের পেশাগত জগতে একেবারে সবথেকে বেশি কর্মমুখর ছিলেন। সেই সময় একসঙ্গে তিনটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের- মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজ, লোক নায়ক হাসপাতাল, জিবি পন্ত হাসপাতাল প্রধান প্রশাসক ছিলেন।