গিরিশচন্দ্র মুর্মুর পর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপালের দায়িত্ব নিচ্ছেন


সংবাদ একলব্য, ডিজিটাল ডেস্কঃ কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং বিশেষ মর্যাদা লোপের বর্ষপূর্তির দিন ইস্তফা দেন কাশ্মীরের প্রথম উপ-রাজ্যপাল গিরিশ চন্দ্র মুর্মু। এর পরেই জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল পদে গিরিশ চন্দ্র মুর্মুর উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নেওয়া হয় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহাকে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সচিবালয় বৃহস্পতিবার বিবৃতি জারি করে মনোজের নিযুক্তির কথা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল গিরিশচন্দ্র মুর্মুর ইস্তফা রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন। নতুন উপরাজ্যপাল হিসেবে মনোজ সিনহাকে নিয়োগ করেছেন রাষ্ট্রপতি।’’


রাষ্ট্রপতি ভবনের ‘বার্তা’ পাওয়ার পরে ৬১ বছরের মনোজের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গুরুদায়িত্ব পেয়েছি। আজই কাশ্মীর রওনা হব।’’ মুর্মুর মতো দক্ষ আমলার উত্তরসূরি হিসেবে মনোজের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বেছে নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার এবার উপত্যকার্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার বার্তা দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, আজই ৩৭০ ধারা বাতিল এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা বিলোপ করার আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বর্ষপূর্তি। সেই আবহে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা মনোজের নিযুক্তি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। বারাণসীর আইআইটি (BHU)-র প্রাক্তনী মনোজ সিনহার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু ১৯৮২ সালে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসেবে। ১৯৯৬, ১৯৯৯ এবং ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে তিনি জয়ী হন। ২০১৪-’১৯ কেন্দ্রে রেল ও টেলিকম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে গাজিপুরে BSP-প্রার্থী আফজল আনসারির কাছে হেরে যান তিনি।


কেন্দ্রের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল রাজীব মহর্ষির স্থলাভিষিক্ত হবেন মুর্মু। ১৯৮৫-র ব্যাচের গুজরাত ক্যাডারের আইএএস মুর্মু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবেই পরিচিত। মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাত সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি কাজ করেছেন। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে অর্থ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব হয়েছিলেন মুর্মু। গত ৩০ নভেম্বর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত তার আগেই ৩১ অক্টোবর মুর্মুকে জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল (লেফটেন্যান্ট গভর্নর) পদে নিয়োগ করা হয়।


সম্প্রতি মুর্মু একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাকারে বলেছিলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরে অনির্দিষ্ট কাল ধরে রাষ্ট্রপতি শাসন চলতে দেওয়া যায় না।’’ তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ৩৭০ ধারা বিলোপের বর্ষপুর্তিতে আজ উপত্যকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কেন্দ্রকে নিশানা করেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপিডি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতির টুইট, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর এখন গৃহবন্দি।’’
আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা আজ মনোজের নিযুক্তিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘গতকাল রাতে দু’-একটি নাম আলোচনায় এসেছিল। তার মধ্যে আজকের নামটি ছিল না। অপ্রত্যাশিত ঘোষণার বিষয়ে এই সরকারের (কেন্দ্র) উপর পুরোপুরি আস্থা রাখা যায়।’’