PEDESTRIAN FRIENDLY MARKET SPACES

লকডাউন চলাকালীন যে বিষয়টি নিয়ে বার বার অভিযোগ উঠে এসেছিলো তা হচ্ছে বাজার তথা বাজারে সামাজিক দূরত্ব । অনেক ক্ষেত্রে  প্রশাসনের উদ্যোগে সাময়িক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও কোনভাবেই বাজার গুলিতে সামাজিক দূরত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এবার এই বাজার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো কেন্দ্রের আবাসন ও শহরাঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রক।


দৈহিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াতের নিরাপদ ও উপযোগী ব্যবস্থা হিসাবে পথচারীদের সুবিধাযুক্ত বাজার এলাকা গড়ে তোলার বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এজন্য বাজার এলাকাগুলি কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে যথাসম্ভব নিরাপদ রাখতে এবং বাজার এলাকা ক্রেতা-বান্ধব করে তুলতে দেশের শহরগুলির কাছে পথচারীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ আবশ্যক হয়ে উঠেছে।



সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পথচারীদের উপযোগী বাজার এলাকার জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তাব আবাসন ও শহরাঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রকের


কেন্দ্রীয় আবাসন ও শহরাঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রক দেশে বিভিন্ন শহর এবং পুর এলাকাগুলিতে পথচারীদের উপযোগী বাজার এলাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে।

পি আই বি সূত্রে জানা গেছে- বিভাগীয় সচিব শ্রী দুর্গা শঙ্কর মিত্র ১০ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যাবিষ্ট শহরগুলিতে অন্ততপক্ষে এ ধরনের ৩টি বাজার এলাকা এবং ১০ লক্ষেরও কম জনসংখ্যাবিশিষ্ট শহরগুলিতে অন্ততপক্ষে ১টি বাজার এলাকায় পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে।



এছাড়া আরও যে সমস্ত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে –

১। বাজার এলাকা চিহ্নিতকরণ – ১০ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যাবিশিষ্ট কমপক্ষে ৩টি বাজার এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং পথচারীদের উপযোগী হিসাবে তা ঘোষণা করা। ১০ লক্ষের কম জনসংখ্যাবিশিষ্ট শহরগুলিতে অন্ততপক্ষে ১টি বাজার এলাকা চিহ্নিত করা।


২। বাজার এলাকার জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা – পথচারীদের উপযোগী বাজার এলাকা পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ, যেমন – বিক্রেতা, পুর আধিকারিক, ট্রাফিক পুলিশ, পার্কিং এলাকার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি, দোকান মালিক এবং গ্রাহকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা।

এই বাজার এলাকা এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেখানে আগত বা ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে।

একইভাবে, বাজার এলাকায় থাকা বৃক্ষ ও অন্যান্য সবুজ এলাকা অক্ষত রাখতে হবে। প্রয়োজনে বাজার এলাকায় বড় গাছ লাগানো যেতে পারে, যাতে করে পথচারীদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা হয়। এছাড়াও, বাজার এলাকাগুলিতে বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহে উপযুক্ত ব্যবস্থা এবং শৌচাগারের সুবিধা থাকে।

৩। পরিকল্পনা প্রস্তুত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট নগর কর্তৃপক্ষগুলি ২টি পর্যায়ে – স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে এ ধরনের বাজার গড়ে তুলতে পারে। স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থা হিসাবে দ্রুত, অস্থায়ী, সহজে দোকান খোলা ও বন্ধ করা এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের যাতায়াতের নিরাপদ ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।

৪। বাজার এলাকা নির্মাণের সময় ব্যারিকেট, যানবাহনের জন্য রাস্তা সাময়িক বন্ধ প্রভৃতি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। পথচারীদের হাঁটার সময় পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। পুর কর্তৃপক্ষগুলি বাজার এলাকায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত সড়কের বন্দোবস্ত করতে হবে। একইভাবে, সাইকেল আরোহীদের যাতায়াতের পৃথক বা সুনির্দিষ্ট সড়কের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মোটর গাড়িগুলির জন্য পর্যাপ্ত রাস্তার বন্দোবস্ত করতে হবে, যাতে অন্য পথচারীদের অসুবিধা না হয়। বাজার এলাকায় যাতায়াতের পথ আরও প্রশস্ত করতে পারবে পুর কর্তৃপক্ষগুলি।




৫। সময়সীমা- পথচারীদের উপযোগী বাজার এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ আগামী ৩০শে জুনের মধ্যে শেষ করা যেতে পারে। এরপর, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য তিন মাস অর্থাৎ ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। বিক্রেতাদের উপযুক্ত জায়গা চিহ্নিতকরণের কাজ ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে তা রূপায়ণের কাজ শুরু করা যেতে পারে।


এখন দেখার কেমন হবে এই ক্রেতা বান্ধব নতুন বাজার, আর কতটাই বা সংক্রমণ রোধে কার্যকর হবে। 





credit: pib