কোভিড -১৯ সংকট বিশ্বব্যাপী প্রতিটি অঞ্চলের ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করেছে। ক্ষুদ্রঋণ শিল্প বা মাইক্রোফিনান্স ইন্ডাস্ট্রি ও এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিস্তার পায়নি। মহামারীটির প্রাদুর্ভাব রোধে লকডাউন আরোপের ফলে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলির কাজও দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যহত হয়েছিল, যা এই শিল্পে লিকুইডিটির সমস্যা তৈরি করেছিল। তবে, এখন আবার সংস্থাগুলি তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করছে, তাই তারা আশাবাদী যে এই এমএফআই শিল্প যা মূলত গ্রামীণ ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত, শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে। কলকাতার এমএফআই ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (ভিএফএস) এর এমডি এবং সিইও কুলদীপ মাইতির কথায়, 'স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসার পরে নিয়মিত নগদের সরবরাহের মাধ্যমে এই মাইক্রোফিনান্স শিল্পের পুনরুদ্ধার হতে পারে।' ।

মাইতির মতে, "গ্রামীণ অর্থনীতি দেশের উন্নয়নের পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এমএফআই শিল্প গ্রামীণ উদ্যোগগুলির কাছে নগদ প্রবাহের প্রধান উৎস, তাই এটি পল্লীভিত্তিক ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপকে সচল রাখতে গুরুত্ত্বপুর্ন ভূমিকা নেবে।" এই দৃষ্টিকোণ থেকে, এমএফআই শিপ্ল কোভিড -১৯ -পরবর্তী বিশ্বে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।

আরবিআই দ্বারা নিবন্ধিত প্রথম এনবিএফসি-এমএফআই হিসাবে ভিএফএস ২০০৬ সালে পূর্ব ভারতে তার ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসা শুরু করে। তার পর থেকে এটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষকে তাদের উপার্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ নিয়মিত প্রদান করে আসছে এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য তাদের উৎসাহিত করছে । বছরের পর বছর ধরে ভিএফাস অনেক ঋণগ্রহণকারীকে সফল উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করেছে ।

বর্তমানে ভিএফএস দেশের ১৩ টি রাজ্যে, যেমন - পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, সিকিম, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়, মেঘালয়, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ এ অবস্থিত তার ২৪৬ টি শাখার মাধ্যমে ৫ লক্ষেরও বেশি মহিলাকে ঋণ প্রদান করছে। সংস্থাটি ২০১৯ -২০ অর্থবছরে হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ দুটি রাজ্যে তার ব্যবসা শুরু করেছে।

সংস্থাটি ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ক্যাশলেস পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন "আমাদের ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া এখন সম্পূর্ণ নগদহীন হয়ে গেছে। আমি অবশ্যই মানি যে প্রযুক্তি কখনোই মানুষের সংযোগ কে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। আমরা নন-কল্যাটেরাল ঋণের ব্যবসায়ে আছি। ঋণগ্রহীতাদের সাথে আমাদের সম্পর্কই আমাদের কাছে ঋণের কল্যাটেরাল। অতএব, আমরা সর্বদা " টাচ অ্যান্ড টেক " মডেল অনুসরণ করে থাকবো।"

সংস্থার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে কুলদীপ মাইতি বলেন, 'আমরা আগামী বছরগুলিতে আমাদের ব্যবসা ২০ টি রাজ্যে প্রসারিত করতে চাই এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে ১ মিলিয়ন গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর ও তাদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা আমরা করব ।'