উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে কিছু কথা 
ডা : অজয় মন্ডল 
MBBS , FCCS, PGDC, PGDD 

হাইপারটেনশন বাংলায় যাকে বলি উচ্চ রক্তচাপ, যেখানে রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের চাইতে বেশি থাকে তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে। তবে কেও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে তা বলার আগে অন্তত তিন দিন তিনটি ভিন্ন সময়ে অন্তত ৫ মিনিট বসে থাকার পর রক্তচাপ মাপা উচিত। যদি তিন বারই বেশি পাওয়া যায়, তবে তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলে নিশ্চিত বলা যায়। 

প্রায় ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই হাইপারটেনশনের কোনো কারন থাকেনা তাকে "প্রাথমিক হাইপারটেনশন" বলে চিহ্নিত করা হয়।বাকি ৫-১০% হাইপার টেনশন বিভিন্ন রোগের কারণে হয়। 


শ্রেনীবিভাগ -

রক্তচাপ 
শ্রেনী বিভাগ mmHg
সাধারণ ৯০–১১৯
প্রিহাইপারটেনশন ১২০–১৩৯
পর্যায় ১ হাইপারটেনশন ১৪০–১৫৯
পর্যায় ২ হাইপারটেনশন ≥১৬০

সাধারনভাবে, যদি কোনও ব্যক্তির সিস্টোলিক রক্ত চাপ উভয় বাহুতে ১৪০ মি.মি পারদ অথবা তার উপরে থাকে কিংবা ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৯০ মি.মি পারদ অথবা উপরে থাকে,তাহলে তাকে উচ্চ রক্ত চাপ বলা যেতে পারে। ১২০/ ৮০ mmhg রক্ত চাপ থেকে ১৩৯/৮৯ mmhg পর্যন্তকে "প্রিহাইপারটেনশন বলে । প্রিহাইপারটেনশন কিন্তু রোগের মধ্যে পড়েনা । কিন্তু আশঙ্কা করা যায় যে কোনো ব্যক্তির এরকম রক্তচাপ থাকলে পরবর্তীকতে উচ্চ রক্তচাপের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে । সুগার বা কিডনি রোগীর ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩০/৮০ mmhg অধিক রক্তচাপকে ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত এবং এর দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত । 

কারন -
যে সকল কারণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে সেগুলো হল: অত্যধিক লবণ গ্রহণ, শরীরের অতিরিক্ত ওজন , কাজের অত্যধিক চাপ, বেপরোয়া মদ্যপান, কম শারীরিক পরিশ্রম যুক্ত কাজ করা , অত্যধিক মশলা যুক্ত খাবার , দুধ চা সেবন , শুকনো মুড়ি খাওয়া ইত্যাদী । উচ্চমাত্রার লবণের ব্যবহার এর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান কারন হিসাবে গন্য করা হয় । প্রায় শতকরা ৬৫ ভাগ উচ্চ রক্তচাপের রোগী লবণের ব্যবহার অধিক মাত্রায় করে থাকে । 

উচ্চরক্তচাপ সাধারনত বংশানুক্রমে পরিবারের বাবা মা থেকে ছেলে মেয়ের মধ্যে দেখা দেয় । উচ্চরক্তচাপ কিজনির সমস্যার জন্য ও ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে যা হয় তা হল , কিডনির মধ্যেকার ধমনী গুলোর মধ্যে রক্তসঞ্চালন কমিয়ে দেয়, কারণ রেনিন-এনজিওটেন্সেন সিস্টেম কিডনির প্রধান ও শাখা ধমনী গুলোকে সঙ্কীর্ণ করে দেয় । যদিও উচ্চ রক্তচাপ আলাদাভাবে কোন অসুস্থতা নয়, কিন্তু প্রায়ই এর চিকিৎসা প্রয়োজন হয় কারণ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের উপর এর স্বল্প থেকে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে। বিশেষত হৃদযন্ত্র বিকল , কিডনি বিকল , অন্ধ্যত্ব , স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।

যদিও খুব সামান্য গর্ভবতী মহিলাই উচ্চ রক্তচাপ রোগে ভোগেন , কিন্তু শতকরা ৮ ভাগ পর্যন্ত প্রসুতি মা গর্ভধারণের কারণে উচ্চ রক্তচাপের কারনে ভোগে । 

লক্ষন - 

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপের তেমন কোন লক্ষণ থাকে না। আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন কিন্তু তারা নিজেরা সেটা জানেন না। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় অন্য কোনো রোগের জন্য চিকিৎসা নিতে গিয়ে অথবা দীর্ঘদিনের উচ্চ রক্তচাপ থেকে কোন একটা জটিল বা খারাপ কিছু হবার পরেই ধরা পড়ে এই উচ্চ রক্তচাপের ব্যাপারটা। এজন্য একে 'নীরব ঘাতক' বলা হয়ে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে অবশ্য মাথা ব্যাথা বা ভার লাগা, শরীর খারাপ লাগা ইত্যাদি দেখা যায়। এক অর্থে তাদের ভাগ্য ভাল, কারণ তাদের ক্ষেত্রে প্রথম দিকেই রোগটা ধরা পড়ে। 

রক্তচাপ অনেক বেশি বেড়ে গেলে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন, মাথা ব্যাথার পাশাপাশি চোখে ব্যাথা বা ঝাপসা দেখা, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া অথবা নাক দিয়ে রক্ত পড়া। একে ম্যালিগন্যান্ট হাইপারটেনশন বলে। সেক্ষেত্রে দেরী না করে হাসপাতালে যাওয়া উচিত 




নির্নয় - 
২০ বছর বয়স থেকেই বছরে একবার রক্তচাপ মাপা উচিৎ। ৩৫-৪০ বছর বয়স থেকে আরো নিয়মিত মাপতে হবে। এক্ষেত্রে বাবা-মা কারো যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে সন্তানদের আরো সতর্ক হতে হবে।

হাইপারটেনশনের অবস্থা নির্নয়ের জন্য সাধারণত এক সপ্তাহের বিরতিতে কমপক্ষে তিনবার রক্তচাপ মাপা উচিত । সঠিক চাপ মাপার জন্য কয়েকটি নিয়ম মানা জরুরী এবং অন্যান্য যেসকল বিষয় রক্তচাপকে প্রভাবিত করে সেগুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন। যেমন, রক্তচাপ মাপার কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে থেকে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কফি গ্রহণের কমপক্ষে একঘণ্টা পরে মাপতে হবে, দুশ্চিন্তামুক্ত অবস্থায় মাপা জরুরী। রক্তচাপ মাপার আগে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় বসা অবস্থায় থাকা উচিত।




চিকিৎসা - 

মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের রক্তচাপের জন্য চিকিৎসকেরা ওজন কমানো এবং নিয়মিত ব্যয়াম ও অত্যধিক লবন সেবন বন্ধ করাচা চিকিৎসার প্রথম ধাপ হিসেবে ধরেন। যদিও এই পদ্ধতিগুলি রক্তচাপ কমানোর জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসু। বেশিরভাগ রুগীই মাঝারি থেকে উচ্চ রক্তচাপে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঔষধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন তাদের রক্তচাপ নিরাপদ মাত্রায় নিয়ে আসার জন্য। যদিও ধূমপান ছেড়ে দেয়া সরাসরি রক্তচাপ কমায় না, কিন্তু উচ্চ রক্তচাপের সাথে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এর ফলে উচ্চ রক্তচাপের খারাপ উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে আসে যেমন স্ট্রোক অথবা হার্ট এটাক। 

মৃদু উচ্চরক্তচাপ সাধারণত খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম এবং শারিরীক কসরত বা দিনের যেকোনো সময় পাক্কা ঘাম ঝরানো ৩০ মিনিট হাঁটার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করা যায়। প্রচুর পরিমানে সবুজ ফল ও শাক সব্জী , দুগ্ধজাত খাদ্য এবং নিম্নমাত্রার লবণ ও কম তেলের খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ যুক্ত রোগীর রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম রক্ত চলাচলের উন্নতি করে, এবং রক্তচাপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও পরিবেশগত চাপ যেমন উঁচ্চ মাত্রার শব্দের পরিবেশ বা অতিরিক্ত আলো এড়িয়ে চলা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য উপকারী । 

বাজারে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য বহু রকমের মেজিসিন পাওয়া যায় যেগুলো অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ নামে পরিচিত যা রক্তচাপ কমিয়ে আনে। নিয়মিত মেডিসিন খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৪০%, করোনারী হৃদরোগের ঝুঁকি প্রায় ১৫-২০% কমিয়ে আনে এবং হার্ট ফেইলিউরের সম্ভাবনাও কমে আসে। সাধারণভাবে 

ঔষধসমূহের মধ্যে রয়েছে, 

1. Beta blocker - metoprolol, atenolol, labetalol, carvedilol, 
2. ACE inhibitor - lisinopril, quinapril, fosinopril, captopril, ramipril 
3. Angiotensin receptor blocker - যেমনঃ losartan, valsartan, irbesartan;
4. Calcium channel blocker - amlodipine, verapamil; 
5. Diuretics - যেমন chlortalidone, hydrochlorothiazide । 
6. Combination সাধারণত হাইড্রোক্লোরথায়াজাইড এবং অন্য যেকোনো গ্রুপের রক্তচাপের ঔষধ একত্রে),
7. Alfa blocker - যেমন terazosin এবং prazosin.
8. nitrate 
9. vasodilator ইত্যাদী । 


প্রাকৃতিক উপায় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে - 

1. লবণ কমানো: আপনার খাদ্যে সোডিয়াম (লবণ) এর পরিমাণ হ্রাস করাই হচ্ছে সবচেয়ে সুপরিচিত এবং কার্যকর কৌশল, যা আপনি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োগ করতে পারেন। বেশিরভাগ মানুষ প্রতিদিন 9-12 গ্রাম লবণ ব্যবহার করে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত 5 গ্রামের চেয়ে বেশি।অতিরিক্ত লবণের পরিমান অর্ধেক করুন অথবা কম সোডিয়ামযুক্ত লবণ ব্যবহার করুন। 

2. ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেটে রয়েছে উপকারী যৌগ যা পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড নামে পরিচিত। এই যৌগগুলি শুধুমাত্র রক্তচাপই কমাতে সাহায্য করে 

3. বেরি: আপনার নিয়মিত স্বাভাবিক ডায়েটের পাশাপাশি এক পোর্শন বেরি, পলিফেনলসের আকারে অতিরিক্ত সুবিধা যোগ করে, যা আপনার হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।

4. চিনিযুক্ত কোমল পানীয় বাদ দিন: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে সোডা বা চিনিযুক্ত কোমলপানীয় উচ্চ মাত্রায় চিনির কারণে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।

5. হোয়ে প্রোটিন: হোয়ে প্রোটিন (56 গ্রাম/ডিএল ) আপনার ডায়েট যোগ করলে আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে; উপরন্তু, এটি হার্ট ও মেটাবলিক সিস্টেমকে ভালো রাখে । 

6. রসুন: রসুন আপনার রক্তচাপ উন্নত করার জন্য একটি কার্যকর এবং নিরাপদ পদ্ধতি। যদিও প্রভাবের মাত্রা কয়েক mmHg হতে পারে, তবুও আপনার খাবারে রসুন যোগ করলে তা স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু উভয় হবে।

7. যোগ ব্যায়াম এবং ধ্যান: চাপ খুব দৃঢ়ভাবে হাইপারটেনশন এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই, যেকোনো কিছু যা চাপকে হ্রাস করতে পারে, তা অবশ্যই রক্তচাপ হ্রাসেও কাজে দেয় । আপনার দৈনন্দিন জীবনে যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং প্রাণায়াম অভ্যাস করে ফেলুন । 


উচ্চরক্তচাপ নিয়ে মানুষের কিছু ভুল ধারনা -

হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ একটি অতি পরিচিত সমস্যা। আমাদের চারপাশের অনেকেই এই অসুখে ভুগছেন। তবে সমস্যাটি নিয়ে আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা অনেক, চিকিৎসাবিজ্ঞানে যার কোনো ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে জেনে নিন: 

1. রক্তচাপ বাড়লে ঘাড়ব্যথা হয়- 

ঘাড়ে ব্যথা হলে কেউ কেউ মনে করেন, নিশ্চয়ই রক্তচাপ বেড়েছে। এই ধারণা অমূলক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বৃদ্ধির কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না। সাধারণত হাড়ের জোড়া বা সন্ধির সমস্যায় ঘাড়ব্যথা হয়ে থাকে।

2. রক্তচাপ বেশি থাকলে দুধ-ডিম নিষেধ- 
দুধ-ডিম-মাংস খেলে রক্তচাপ বাড়ে—এ ধারণা ভুল। রক্তচাপ বাড়তি দেখলে কেউ কেউ দুধ-ডিম খাওয়া ছেড়ে দেন। কিন্তু আসলে লবণ বা লবণাক্ত খাবার বেশি খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিকে তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, যেমন ডিমের কুসুম, দুধের সর, চর্বিযুক্ত মাংস ইত্যাদি খেতে নিষেধ করা হয়

3. টক খেলে রক্তচাপ কমে- 
এই ধারণাও ভুল। রক্তচাপের পরিমাণ বেশি দেখলে কেউ কেউ তেঁতুলের জন বা টক খান। লবণ মিশিয়ে এসব খেলে রক্তচাপ আরও বাড়তে পারে। আর লবণ ছাড়া খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়।

4. লবণ ভেজে খাওয়া যাবে- 
উচ্চ রক্তচাপের জন্য কাঁচা লবণ খেতে নিষেধ করায় অনেকে লবণ হালকা ভেজে খান বা রান্নায় লবণের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। এটা যেভাবেই খান না কেন, তা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেবে।

5. রক্তচাপ কমলে ওষুধ নয়- 
উচ্চ রক্তচাপের অনেক রোগী রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেন, যা একেবারেই ঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ হঠাৎ বন্ধ করলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, এমনকি জীবনের ঝুঁকিও থাকে।




6. সমস্যা নেই বলে ওষুধ বাদ দেবেন- 
রক্তচাপ বাড়তি থাকলেও শরীরে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, এমন অজুহাতে কেউ কেউ ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে চান। আসলে উচ্চ রক্তচাপে তেমন কোনো উপসর্গ না থাকলেও এটি ধীরে ধীরে হৃদরোগ , পক্ষাঘাত, দৃষ্টিহীনতা ও কিডনি অকার্যকারিতার ঝুঁকি বাড়াবে। দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এড়াতেই আপনাকে ওষুধ দেওয়া হয়। অনেকে বলেন, এই ওষুধ শুরু করলে সারা জীবন খেতে হবে, তাই শুরু না করাই ভালো। এটাও বিপজ্জনক চিন্তা। প্রয়োজন হলে ওষুধ অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা উচিত, নয়তো জটিলতা বাড়বে।




7. রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ টেনশন- 
মানসিক চাপ, উদ্বেগ ইত্যাদি কিছুটা দায়ী বটে। তবে কেবল মানসিক উৎকণ্ঠা উচ্চ রক্তচাপের একমাত্র কারণ নয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন, ওজনাধিক্য, ধূমপান, মদ্যপান, তেল-চর্বিজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ প্রভৃতি উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। জীবনাচরণ পরিবর্তন করে রক্তচাপ বাড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারবেন।


8. অন্যের ওষুধে ভালো কাজ হয়- 
উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে আপনার বয়স, উচ্চ রক্তচাপের তীব্রতা, আনুষঙ্গিক অন্য রোগ (যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ , হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস, হাঁপানি, প্রোস্টেটের সমস্যা, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি) অনেক বিষয় বিবেচনা করেই রক্তচাপ কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়। কোনো ওষুধ কারও জন্য প্রয়োজনীয়, আবার একই ওষুধ অন্য কারও জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই যে ওষুধে অন্যের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেটা আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়ার চিন্তাও করবেন না।


পরিশেষে আপনাদের কে এটাই বলার " একবার ওষুধ খাওয়া শুরু করলে চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। প্রেশার নিয়ন্ত্রণে চলে আসলেও ওষুধ খাওয়া চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। কারণ ওষুধ বন্ধ করলে আবার রক্তচাপ বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। আর মাঝে মাঝেই ডাক্তারের কাছে ফলো আপ এর জন্য যাওয়া উচিত ওষুধ ঠিকমত কাজ করছে কিনা, অন্য কোন জটিলতা তৈরি হচ্ছে কিনা। এছাড়া যেকোন সমস্যায় ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।”