বাঙালির কাছে পয়লা বৈশাখ দিনটা একটা অন্য অনুভূতি। বলতে পারেন এই দিনে জন্ম নেয় নানা রঙিন স্বপ্নের বাঙালির মনে। সকাল থেকে পুজো, নতুন জামাকাপড়, নতুন নতুন খাবার খাওয়া, বন্ধুদের সাথে হৈ-হুল্লোড়, গুরুজনদের থেকে আশীর্বাদ, সব কিছু নিয়ে একটা অন্য আনন্দ এই পয়লা বৈশাখ। একটি বছরের পর আরো একটি বছর আসে। নতুন বছরে সবাই স্বপ্নে বাঁধে তাদের এক বুক। কিন্তু এই বছরের পয়লা বৈশাখ টা একটু অন্যরকম। সারা পৃথিবীর মানুষ একটি ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। করোনা আতঙ্কে সবাই এখন গৃহবন্দী। ঠিক কেমন ভাবে এই গৃহবন্দী অবস্থায় টলিউডের সেলেবরা পালন করছে এই বছরের পয়লা বৈশাখ? আড্ডা আর খোশমেজাজে ধরা দিয়েছিল টলি জগতের অন্যতম সঞ্চালক সান্তনু মজুমদার। ফোনের ওপারে মৃদু হাসিতে উত্তর দিল নানা প্রশ্নের। শেয়ার করলো নানা অজানা কথা। তার কিছু কথা আপনাদের জন্য।

সান্তনু মজুমদার - বাঙালি নতুন বছর ১৪২৭ এর প্রথম দিন , সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠতেই  মা বলল - "এখন উঠিস না- কোনতো কাজ নেই আরো ঘুমা, আর শোন  একদম বাইরে বেরোবি না।" আর তখন থেকেই বাংলার নতুন বছরটা শুরু হলো 'না' শব্দটাকে  সাথে নিয়ে,  মনেপ্রাণে  বাঙালি হয়েও বাংলা নববর্ষের দিন নতুন জামা পড়বো না,  প্রিয় মানুষদের সাথে দেখা করব না,  জমিয়ে আড্ডা আর কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া দাওয়া হবে না, তা কখনো হয়? যা এত বছর  হয় নি সেটাই হল এ- বছরে - প্রতিটা মানুষের জীবনে বাঙালা নববর্ষ টা একটি ইতিহাস তৈরি করল এইবার, বঙ্গবাসীর জীবনে এই বছরটা স্মরণীয় থাকবে কারণ এ বছর বাঙালি  নতুন জামা পরা, দুপুরবেলা জমিয়ে গোটা পরিবারের সাথে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া দাওয়া, আর সন্ধ্যেবেলায় দোকানে দোকানে গিয়ে নতুন খাতা খোলার সাথে মিষ্টির প্যাকেট আর গ্লাসভর্তি কোলড্রিংস এই সমস্ত কিছু থেকেই বঞ্চিত রইল, এবছর আমার মতই বাকি আপাদমস্তক বাঙ্গালীরা নববর্ষ উদযাপন করল মাস্ক আর স্যানিটাইজার কে সাথে নিয়ে, প্রতিপক্ষ করোনা ভাইরাস। অন্যান্য বছর এই দিনে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান থাকলেও, এ বছরের পয়লা বৈশাখটা, চার দেওয়ালের মধ্যেই উদযাপন করালাম, যেহেতু ভোজন রসিক বাঙালি তাই সকালটা শুরু হলো লুচি আর ছোলার ডালের মাধ্যমে, এরপর গোটা পরিবারের সাথে বসে ডাল ভাত, আর তারপর ফেলে আসা বৈশাখের স্মৃতি রোমন্থন করে আর পরের বছর পয়লা বৈশাখ নতুন করে উদযাপনের আশা নিয়েই  কেটে গেল নতুন বছরের প্রথম দিনটা।