pic source: calcuta high court. gov. in 
দেশের ক্রেতা মূল্যসূচক বা সিপিআই এর উপর ভিত্তি করে এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বকলমে স্যাট। স্যাট রায়ে জানিয়েছিল, কত ডিএ বকেয়া, নির্ধারণ করতে হবে ৩ মাসের মধ্যে আর দিতে হবে ৬ মাসের মধ্যে! রাজ্য সরকার দেরি করছিল বলে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের পক্ষ থেকে নবান্নে মুখ্য সচিব মলয় দে ও অর্থ সচিবের কাছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা মামলায় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের রায়ের সার্টিফাইড কপি জমা দেন মামলাকারী তথা কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়।

মলয় মুখোপাধ্যায় তখন জানান রাজ্য সরকার এতটাই উদাসীন ২৬শে জুলাই থেকে এতদিন হয়ে যাওয়ার পরেও রায়ের সার্টিফায়েড কপিটাই তোলেনি, তাই বাধ্য হয়ে আমরাই তা জমা করলাম।
বর্তমান পরিস্থিতি হল স্যাটের দেওয়া সেই তিন মাসের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে তেমনভাবে কোন সদর্থক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে! আজ কনফেডারেশন (আইএনটি ইউ স)এর পক্ষথেকে ট্রাইবুনালে "আদালত অবমাননা" মামলা দায়ের করা হয়।

গত ২৬ জুলাই ডিএ সংক্রান্ত স্যাটের ঐতিহাসিক রায় পুনর্বিবেচনায় আর্জিও গৃহীত হয়েছে আদালতে৷ রায় পুনর্বিবেচনায় সিদ্ধান্তের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে৷ অথচ রায় পুনর্বিবেচনায় জন্য এক মাসের মধ্যে আবেদন করতে হয়৷ 

গত ৫ নভেম্বর এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে গত ২৬ জুলাই ডিএ মামলার রায় পুনর্বিবেচনায় জন্য আর্জি জানানো হয়৷ কিন্তু, রায় ঘোষণার ১ মাসের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন না জমা হওয়ায় স্যাটের তরফে রাজ্যকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, সরকারের আবেদনের কপি প্রতিপক্ষকে দিতে হবে৷


সেই আবেদনের ভিত্তিতে  রায় পুনর্বিবেচনায় আর্জি গ্রহণ করেছে আদালত৷ একই সঙ্গে কেন স্যাটের নির্দেশ কার্যকর হল না, সেই বিষয়ে দায়ের হওয়া আদালত অবমাননার শুনানিও চলবে বলে খবর৷ আজ মহার্ঘ ভাতা মামলার  শুনানির দিন ধার্য করছিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল৷


আজ দুপুর আড়াইটে নাগাদ বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ ও বিচারপতি সুবেশ কুমার দাসের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল৷ গত ২৬ জুলাই ডিএ মামলার রায় পুনর্বিবেচনায় জন্য রাজ্যের তরফে আবেদন করা হয়েছে৷ ডিএ মামলার রায় কার্যকর না হওয়ায় আদালত অবমাননা মামলা দায়ের করছে কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ৷ তাদের দাবি, স্যাটের রায় অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত নীতি নির্ধারিত হয়নি৷ আর তার জেরে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়৷

গত ২৬ জুলাই স্যাট সাফ জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রীয় সরকারের হারে রাজ্য কর্মীদের ডিএ দিতে হবে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার৷ মেটাতে হবে বকেয়া ডিএ৷ এই মর্মে নীতি নির্ধারণের জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ কিন্তু, নীতি নির্ধারণ তো দূর, স্যাটের রায় কার্যকর করা হয়নি বলে অভিযোগ৷

আজ রাজ্য সরকারের  এডভোকেট  জেনারেল 
পুনর্বিবেচনা করার কারণ উল্লেখ করে জানায়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার বিষয়টি আইনগত কোন অধিকার নেই৷ এছাড়া রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষমতা নেই সেটা মিটিয়ে দেওয়ার৷ এই সাথে আরও জানায়  প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল তাদের রায় দেওয়ার সময় কিছু আইন বিবেচনা করেনি৷ ফলে, রায় পুনর্বিবেচনা করা হোক৷

সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে আইনজীবী আমজাদআলি তার তীব্র বিরোধীতা করেন৷  তিনি জানান, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ভাতা না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে শুধুশুধু আইনি জটিলতার মধ্যে ফেলা হচ্ছে৷ দীর্ঘ সময় কাটানোর চেষ্টা করছে রাজ্য৷ কারণ, রাজ্যের তিনটি আপত্তির মধ্যে দু’টি আপত্তি নিয়ে আগেই শুানানি হয়েছে৷ ফলে, একই বিষয় দ্বিতীয়বার তুলে সময় অপচয়ের চেষ্টা চলছে৷ 

কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী বলেন, ‘‘সরকারের এই পদক্ষেপ রীতিমতো হয়রানিমূলক৷ বেআইনি এবং রিভিউ করার যে আইনগত নীতি আছে সেই নীতি বিরোধী৷’’ 

আজ সব পক্ষের সওয়াল শোনার পর ট্রাইব্যুনাল  আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।