একজন শিক্ষকের স্ত্রী তাঁর অবর্তমানে বেঁচে থাকার জন্য রোলার মোছার কাজ করছেন। আর সেই ছবি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যা ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে শিক্ষিত সমাজকে।

মোথাবাড়ি ব্লকের শ্রীপুর গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ মন্ডল বাবুর বাড়ি।স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে এবং বৃদ্ধা মা  নিয়ে সংসারে একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি ছিলেন বিজ্ঞানে মেধাবী ধীরেন বাবু।   

বাবলা তে ২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গ প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং-  সেখানে ডি এল এড করবার সময় প্রথম  বর্ষে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসা করবার মতন অর্থ একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষকের -সংসার চালিয়ে সম্ভব নয় বলে-অসুখ পুষে রাখতে রাখতে চিরবিদায় নেন ২০১৮ সালে।
কিন্তু রেখে গেছেন পুরো পরিবারটিকে,যাদের কাছে একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন ধীরেন বাবু।  পরিবারটি আজ পথে বসেছে। আজ তার স্ত্রী রাস্তা তৈরির রোলার মোছার কাজ করছেন পরিবারের মুখে অন্ন জোগাতে ।

বড় মেয়ে পড়াশুনা বাদ দিয়ে বিড়ির কাজ করে। যদিও  ক্লাস সেভেনে ছোট মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে ফাইভে পড়ছে ।   


গত ৩ তারিখ আজিজুল হক বাবু সেই ছবিটি পোস্ট করেন নিজের ফেসবুকে যা তিনি তুলেছেন বলে জানিয়েছেন। আজ তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-" ধীরেন বাবু এবং আমি একসাথে ডি এল এড করেছি। ডি এল এড করবার সময় চিকিৎসার অভাবে তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার বেশকিছুদিন পর একদিন হঠাৎ ধীরেন দার স্ত্রীকে রাস্তার কাজ করতে দেখে আমি বিস্মিত হয়ে যাই। এগিয়ে তার কাছে গেলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন। '

তিনি আরও জানান-'এরপর আমি ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগ নিয়ে আর্থিক সহযোগিতা করি-যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।'
পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক ভগীরথ ঘোষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান-' ঘটনাটি শুনেছি, ধীরেন বাবু আমাদের সংগঠনের সদস্য ছিলেন। আজ আমাদের এই আর্থিক করুন অবস্থার জন্যই আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। ধীরেন বাবুর পরিবারকে সংগঠনের পক্ষথেকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করবার ব্যবস্থা আমরা করবো।'
পার্শ্বশিক্ষক  শিক্ষক সঞ্জয় গুহ জানিয়েছেন-  "আজ যদি আমি কিছু রেখে না যেতে পারি তাহলে ঐ অবস্থার সম্মুখীন হয়তো আমাদের পরিবারের লোকেরাও হবেন। ভাবলেই কেমন যেন শিউরে উঠছি।'




like our facebook page for more update