চলে গেলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন। শেষ হয়ে গেল বাংলা সাহিত্যের এক অধ্যায়! শোকের ছায়া সাহিত্য মহলে।
আজ কলকাতায় নিজের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন নবনীতা দেবসেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর ৷ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি ৷ বিকল হয়ে যায় অঙ্গপ্রতঙ্গ ৷

নবনীতা দেবসেন (জন্ম ১৩ জানুয়ারী ১৯৩৮) একজন বাঙ্গালি কবি, লেখক এবং শিক্ষাবিদ। ২০০০ সালে উনি পদ্মশ্রী সন্মানে ভূষিত হন।

নবনীতা দেবসেন দক্ষিণ কলকাতায় হিন্দুস্থান পার্কে তার বাবা- মা'র 'ভালবাসা' গৃহে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা নরেন্দ্র দেব ও মাতা রাধারানী দেবী সেযুগের বিশিষ্ট কবি দম্পতি। ছেলেবেলায় এক বিশেষ সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশে তিনি বড় হয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া উনি হিন্দি, ওড়িয়া, অসমীয়া, ফরাসী, জার্মান, সংস্কৃত এবং হিব্রু ভাষাগুলি পড়তে পারেন। গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস, লেডি ব্রেবোর্ণ ও প্রেসিডেন্সি কলেজ, যাদবপুর , হার্ভার্ড, ইণ্ডিয়ানা (ব্লুমিংটন) ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন। ১৯৭৫- ২০০২ তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপিকা ও বেশ কিছুকাল বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। তাকে তুলনামূলক সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট অথরিটি মানা হয়। যাদবপুরে তিনি কবি বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্তের স্নেহধন্য ছাত্রী ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি সাহিত্য একদেমি পুরস্কার পান তার আত্মজীবনী মূলক রম্যরচনা 'নটী নবনীতা' গ্রন্থের জন্যে। এছাড়াও তিনি মহাদেবী বর্মা ও ভারতীয় ভাষা পরিষদ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।

১৯৫৯ এ তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রথম প্রত্যয়' প্রকাশিত হয় ও প্রথম উপন্যাস 'আমি অনুপম' ১৯৭৬ এ। কবিতা, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, ভ্রমণ কাহিনী, উপন্যাস মিলে তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৩৮। এখনো নিয়মত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি করেন।

১৯৬০ এ তিনি বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ (পরবর্তীকালে নোবেলজয়ী) অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ও তাদের দুই কন্যা। জ্যেষ্ঠা অন্তরা সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং কনিষ্ঠা নন্দনা অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া