জগমোহন ডালমিয়ার পর বাংলা থেকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হচ্ছেন মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলি l  নানা টানাপোড়েন এর পর সৌরভ গাঙ্গুলি এক প্রকার ছিনিয়ে নিলেন এই পদl নানা রাজনৈতিক বাধা থাকলেও সিংহভাগ ভোটেই তার পক্ষে ছিল l নির্বাচকদের মত অনুসারে তিঁনিই যোগ্য প্রার্থী l ভারতীয় ক্রিকেট দলের পরিবর্তনের প্রথিকৃৎ এবার কিভাবে প্রশাসকের  ভূমিকা পালন  করে তাই দেখার অপেক্ষায় ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা l
কিন্তু, এই দুর্দান্ত আনন্দের আবহেও প্রবলভাবে ভেসে উঠছে রাজনীতি প্রসঙ্গ। সৌরভ গাঙ্গুলি বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হতেই জল্পনা চলছে যে - বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী  হিসাবে বিজেপিকে সবুজ সঙ্কেত দিতেই - তিনি নাকি এই পদে বসতে পেরেছেন।

তবে সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে বিজেপি যােগের জল্পনা নতুন নয়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মােদী যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য সলতে পাকাচ্ছিলেন, তখনই নাকি গেরুয়া শিবিরের তরফে সৌরভ গাঙ্গুলিকে ‘অফার’ দেওয়া হয়, বিজেপির টিকিটে বাংলার কোনাে এক আসন থেকে লােকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। আর জিতলেই কেন্দ্রে মন্ত্রীত্ব নাকি বাঁধা। কিন্তু, সেই ‘অফার’ পত্রপাঠ মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তখন নাকি, স্বয়ং নরেন্দ্র মােদী সৌরভ গাঙ্গুলিকে গুজরাটের কোনাে সুরক্ষিত আসন থেকে জিতিয়ে এনে কেন্দ্রে ক্রীড়ামন্ত্রকের দায়িত্ব দিতে চান বলে জানা যায়। কিন্তু, সেই প্রস্তাবেও রাজি হন নি বাংলার মহারাজ'। এরপর বাংলার ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও জল্পনা ছড়ায় যে সৌরভ গাঙ্গুলি বিজেপিতে যােগদান করছেন। 

আর এবার ফের! বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে যে, মুম্বইতে বিসিসিআইয়ের সভার আগে, দিল্লিতে সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে একপ্রস্থ আলােচনা সারেন খােদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে সভাপতি পদে মনােনয়ন পেলে, তবেই এগােবেন - নচেৎ নয়।অমিত শাহের সেই আশ্বাস নিয়েই গতকাল বৈঠকে ঢােকেন দাদা'। কিন্তু, বৈঠক যত এগােতে থাকে, ততই দেখা যায় পিছনে চলে যাচ্ছে সৌরভ গাঙ্গুলির নাম। কর্ণাটকের ব্রিজেশ পটেলের নাম প্রায় চূড়ান্ত। এই সময়েই, খেলা ধরেন সৌরভ গাঙ্গুলির বন্ধু বলে পরিচিত অনুরাগ ঠাকুর। তিনি সরাসরি ফোন করেন অমিত শাহকে – আর অমিত শাহ এরপরে দেন এক শর্ত! সেই শর্তে রাজি হতেই নাকি শেষমেশ সৌরভ গাঙ্গুলির নামে সিলমােহর পরে। কিন্তু, কি সেই শর্তঃ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, অমিত শাহ নাকি সরাসরি বাংলায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখ হওয়ার জন্য সৌরভ গাঙ্গুলিকে বলেন। আর তাতে রাজি হতেই, নাকি মিলেছে বাের্ড প্রেসিডেন্টের আসন।

এই নিয়ে বিজেপি প্রভাবিত বিভিন্ন সােশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপেও পােস্টের ঝড় উঠে যায়। আর তারফলেই ক্রমশ তীব্র হতে থাকে মহারাজের বিজেপি যােগের জল্পনা। জল্পনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, শেষমেশ সাংবাদিকরা সরাসরি এই ব্যাপারে প্রশ্নই করে ফেলেন সৌরভ গাঙ্গুলিকে। কিন্তু, দাদা' আবারাে মাহারাজসিক ভঙ্গিতে তাঁর রাজনীতি যােগের সমস্ত জল্পনাকে মাঠের বাইরে ফেলে দিয়েছেন।