সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশে স্থগিত গবাইয়ের রায়—আরাবল্লী সংজ্ঞা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত
সাম্প্রতিক এক ঐতিহাসিক নির্দেশে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নিজেই স্থগিত করল প্রধান বিচারপতি বিআর গবাইয়ের নেতৃত্বে দেওয়া পূর্ববর্তী রায়, যেখানে আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই রায়ে বলা হয়েছিল, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূখণ্ডকেই কেবলমাত্র পাহাড় হিসেবে গণ্য করা হবে। কিন্তু পরিবেশবিদদের তীব্র আপত্তি ও জনমত বিবেচনায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২৫ সালের ২০ নভেম্বর, প্রধান বিচারপতি গবাইয়ের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের সুপারিশকে মান্যতা দেয়। সেই সুপারিশে বলা হয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠ নয়, বরং স্থানীয় ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার অংশকেই পাহাড় হিসেবে গণ্য করা হবে। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণির বহু অংশ পাহাড়ের মর্যাদা হারাত এবং সেখানে খনন ও নির্মাণের পথ খুলে যেত।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫-এ প্রধান বিচারপতি সুর্যকান্তের নেতৃত্বে নতুন বেঞ্চ জানায়, গবাইয়ের রায়ে পরিবেশগত প্রভাব যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি। আদালত জানায়, এই সংজ্ঞা প্রয়োগ করলে আরাবল্লীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল খননের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে, যা উত্তর-পশ্চিম ভারতের পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। তাই রায়টি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে এবং একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরাবল্লী পর্বতমালা ভারতের অন্যতম প্রাচীন ভূ-গঠন, যা দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান ও গুজরাটে বিস্তৃত। এটি মরুভূমির বিস্তার রোধ করে এবং উত্তর ভারতের ভূগর্ভস্থ জল পুনর্ভরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবেশবিদরা বলছেন, এই পাহাড়শ্রেণি ধ্বংস হলে জলবায়ু পরিবর্তন আরও তীব্র হবে এবং স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত হবে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ২১ জানুয়ারি, ২০২৬-এ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত গবাইয়ের রায় কার্যকর হবে না। আদালত স্পষ্ট করেছে, পরিবেশ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊