রেকর্ড বৃষ্টিতে ভাসছে উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়িতে বিপর্যস্ত জনজীবন
উত্তরবঙ্গ: ৫ অক্টোবর, ২০২৫: লক্ষ্মীপুজোর মুখে যেন প্রকৃতির অভিশাপ! গোটা উত্তরবঙ্গের চিত্রই ভয়াবহ। কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি— সব জেলাতেই গত রাত থেকে লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও গত এক রাতে ১৭২ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে, যা এই মরসুমের রেকর্ড।
বন্যা পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গের প্রধান শহরগুলিতে
- জলপাইগুড়ি: শহরের মহামায়া পাড়া, পান্ডা পাড়া, স্টেশন রোড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হাঁটু জলে ডুবে আছে। করলা নদীর জলস্তর বাড়তে থাকায় নিচু এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ। ক্লাব রোডে গাছ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ পরিষেবাও চরম ব্যাহত।
- কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার: এই দুই জেলায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। তোর্সা, কালজানি এবং রায়ডাক নদীর জলস্তর হু হু করে বাড়ছে। বিশেষ করে আলিপুরদুয়ার শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং কোচবিহার শহরের বহু নিচু এলাকা ইতিমধ্যে জলমগ্ন। হাজার হাজার মানুষ জলবন্দী হয়ে পড়েছেন।
- শিলিগুড়ি: বাণিজ্য নগরী শিলিগুড়িতেও একই ছবি। শহরের ফুলেশ্বরী, বাবুপাড়া সহ বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় যান চলাচল প্রায় থমকে গেছে। রাস্তা ও নিকাশি ব্যবস্থার উপর বাড়তি চাপ পড়ায় শহর জুড়ে তৈরি হয়েছে চরম দুর্ভোগ।
যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত, ফুঁসছে প্রধান নদীগুলি
ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সড়ক পথে বহু জায়গায় জল জমে যাওয়ায় এবং পাহাড়ে ধস নামার আশঙ্কায় যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। রেল যোগাযোগেও প্রভাব পড়ার খবর আসছে। অধিকাংশ জেলায় বিদ্যুৎ পরিষেবাও চূড়ান্তভাবে ব্যাহত, ফলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়ছে।
উত্তরবঙ্গের প্রধান নদীগুলি, যেমন তিস্তা, করলা, জলঢাকা, তোর্সা ও রায়ডাকের জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে। সেচ দফতরের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী সমস্ত এলাকায় লাল ও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকে প্রচার চালাচ্ছে এবং ত্রাণ শিবির খুলেছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊