ভোটারদের নাম কাটার চেষ্টা হয়েছিল! মানলো কমিশন, রাহুলের বাকি অভিযোগ 'ভুল ও ভিত্তিহীন' বললো কমিশন
দেশজুড়ে ভোট চুরির প্রমাণ সামনে আনার দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ভাবে সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে পরিকল্পিত ভাবে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ভোট চুরির সেই প্রমাণও তিনি প্রকাশ্যে আনেন।
অন্য দিকে, রাহুলের এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের স্পষ্ট বক্তব্য, অনলাইনে কেউ কোনও ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।
কমিশন আরও জানায়, কর্নাটকের একটি বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে ২০২৩ সালে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা ব্যর্থ হয় এবং কার্যত কোনও নাম বাদ দেওয়া যায়নি।
একটি বিবৃতি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, কর্নাটকের অলন্দ বিধানসভা এলাকায় ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অনলাইনে প্রায় ৬০১৮টা আবেদন জমা পড়েছিল। এত বেশি সংখ্যক আবেদন সন্দেহজনক মনে হওয়ায়, প্রতিটা আবেদন খুঁটিয়ে দেখে কমিশন। দেখা যায় মাত্র ২৪টা আবেদন সঠিক। ৫৯৯৪টা আবেদন ভুয়ো। তাই শুধু ওই ২৪টা গ্রহণ করে বাকি আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে কমিশন।
রাহুল অভিযোগ করেছিলেন, ‘ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া’ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে কর্নাটকের সিআইডি কমিশনকে ১৮ বার চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু উল্টো দিক থেকে কোনও উত্তর মেলেনি বলে দাবি করছিলেন রাহুল। কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, তাদের নির্দেশে কর্নাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পুলিশকে সব তথ্য দেন।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি অভিযোগ এনে বললেন যে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন জমা করে পরিকল্পিতভাবে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি জানান, ঘটনার প্রমাণ হিসেবে মঞ্চের পিছনে একটি স্ক্রিনে কয়েকটি ফোন নম্বর দেখান এবং দাবি করেন যে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই নম্বরগুলো ব্যবহার করে ফর্ম পূরণ করে ভোটারদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
রাহুল আরও বলেন, ‘‘আলাদা করে একটি কর্নাটকের লোকসভা কেন্দ্রের উদাহরণ দিলাম — কেউ কেউ ৬০১৮টি ভোট মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন। আমরা জানি না ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ঠিক কত জনের নাম বাদ গিয়েছে, তবে তা নিশ্চিতভাবেই ৬০১৮-এর বেশি হবে।’’ তিনি একই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন কীভাবে ওই নম্বরগুলোর মাধ্যমে ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাওয়া সম্ভব হলো এবং এর পেছনে কারা সংযুক্ত—সেগুলো তদন্তে আনা প্রয়োজন। রাহুলের এই ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তীব্র হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন যে এটি একটি কেন্দ্রীয়ভাবে সংগঠিত উদ্যোগের অংশ এবং ভোটার তালিকা-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।
রাহুলের অভিযোগকে ‘ভুল এবং ভিত্তিহীন’ বলল কমিশন। তবে ২০২৩ সালে অলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে যে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার ‘ব্যর্থ’ চেষ্টা হয়েছিল, তা স্বীকার করেছে কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, এই বিষয়ে তদন্তের জন্য এইআইআর দায়ের করা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊