সরকারি কর্মীদের ডিএ নিয়ে আইনি যুদ্ধ তুঙ্গে, সুপ্রিম কোর্টে জোরালো সওয়াল
সরকারি কর্মীদের ডিএ (Dearness Allowance) সংক্রান্ত জটিলতা যেন শেষই হচ্ছে না। বকেয়া ডিএ (Arrear DA) মেটানো নিয়ে রাজ্য সরকার এবং সরকারি কর্মীদের আইনজীবীদের মধ্যে আবারও সুপ্রিম কোর্টে তুমুল আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে এই বিষয়ে জোরদার সওয়াল-জবাব চলছে।
রাজ্য সরকারের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন যে বর্তমান বেতন কাঠামো ষষ্ঠ পে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ROPA 2019-এর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। সেই নিয়ম মেনেই ডিএ-র হিসাব নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে, সরকারি কর্মীদের আইনজীবী গোপাল সুব্রামানিয়াম প্রথম থেকেই রাজ্য সরকারের এই যুক্তির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেন। আদালতে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট, ট্রাইব্যুনাল এবং হাইকোর্ট— সব স্তরেই দীর্ঘদিন ধরে ডিএ-র মামলা টেনে নিয়ে যাওয়ার ফলে কর্মীরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই বকেয়া ডিএ কেবল আর্থিক বিষয় নয়, এটি কর্মীদের একটি একান্ত আইনি অধিকার (legal right)। গোপাল সুব্রামানিয়াম সরকারি কর্মীদের ১০০ শতাংশ বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন।
তিনি আরও বলেন যে কলকাতা হাইকোর্ট ডিএ-কে মৌলিক অধিকার (fundamental right) হিসেবে চিহ্নিত না করলেও, এটিকে ‘ন্যায্য বেতনের অংশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল। সেই কারণে ডিএ হলো সরকারি কর্মীদের একটি অনস্বীকার্য অধিকার। গোপাল সুব্রামানিয়াম আদালতের কাছে প্রশ্ন তোলেন, কেন অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ দেওয়ার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা আজও কার্যকর করা হয়নি?
আদালতে সওয়াল করার সময় সরকারি কর্মচারীদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, দিল্লি বা চেন্নাইয়ের মতো অন্য রাজ্যে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের কর্মচারীরা যদি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কেন ভিন্ন নিয়ম প্রযোজ্য হবে?
আইনজীবী এই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে ডিএ-র ক্ষেত্রে রাজ্য এবং কেন্দ্রের কর্মচারীদের মধ্যে এই বৈষম্য থাকা উচিত নয়।
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিকে এখন সবাই তাকিয়ে আছে। সরকারি কর্মীরা আশা করছেন যে দীর্ঘদিনের এই আইনি লড়াইয়ের অবসান এবার হবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊