Independence Day 2025: অপারেশন সিন্দুরের গর্বে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, কাশ্মীর রাজ্য মর্যাদার ইঙ্গিত
৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে ঐতিহাসিক লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৫ সালের ১৫ অগস্ট, শুক্রবার, টানা ১১তম বছরের মতো এই ভাষণ দিলেন তিনি। এবারের ভাষণ ছিল একদিকে স্বাধীনতার উদযাপন, অন্যদিকে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন। বিশেষ করে ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাহসিকতা ও সাফল্যকে কেন্দ্র করে গোটা ভাষণের আবহ তৈরি হয়েছিল।
‘অপারেশন সিন্দুর’ ছিল পাকিস্তানে পরিচালিত একটি সুনির্দিষ্ট পাল্টা-সন্ত্রাসবাদী অভিযান, যা ৭ মে চালানো হয়। এই অভিযান ছিল ২২ এপ্রিল পাহালগামে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়ার জবাব। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে এই অভিযানের পরিকল্পনা, সাহসিকতা এবং সফলতা বিশেষভাবে তুলে ধরেন। লালকেল্লার প্রাঙ্গণে অপারেশন সিন্দুরের প্রতীক, সাজসজ্জা এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে পতাকা ও পুষ্পবৃষ্টি ছিল এই থিমের অংশ।
ভাষণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা। প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপালের সুপারিশ অনুযায়ী প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
‘নয়া ভারত’ এবং ‘বিকসিত ভারত’-এর স্বপ্নকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং প্রতিরক্ষা নীতির দৃঢ়তা তুলে ধরেন। তাঁর ভাষণ ছিল আগামী বছরের জাতীয় কর্মসূচির দিশা নির্ধারণের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্ব।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, স্বাধীনতার জন্য অসংখ্য মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তারা তাদের যৌবন ব্যয় করেছেন। তারা তাদের জীবন কারাগারে কাটিয়েছেন। কিছু অর্জনের জন্য নয়, বরং ভারতের আত্মসম্মানের জন্য। লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বাধীনতার জন্য। দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙার জন্য। মনের মধ্যে কেবল একটি অনুভূতি ছিল - আত্মসম্মান। দাসত্ব আমাদের দরিদ্র করে তুলেছিল। দাসত্ব আমাদের পরাধীনও করে তুলেছিল এবং আমাদের নির্ভরতা বাড়তে থাকে। আমরা সকলেই জানি যে স্বাধীনতার পরে লক্ষ লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এরাই আমার দেশের কৃষক যারা রক্ত-ঘাম ঢেলে দেশের শস্যভাণ্ডার ভরেছিলেন। তারা দেশকে স্বনির্ভর করে তুলেছিলেন। স্বাধীনতার উপরও সমানভাবে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন চাপিয়ে দেওয়া হয়। যখন কেউ নির্ভরশীলতায় অভ্যস্ত হয়ে যায় তখন তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা কখন আত্মনির্ভরতা ত্যাগ করছি এবং কখন আমরা পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ি তা আমরা জানি না। তাই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য সর্বদা সচেতন থাকতে হবে। আত্মনির্ভরতা আমদানি-রপ্তানি, অর্থ এবং ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের শক্তির সাথে সম্পর্কিত। যখন আত্মনির্ভরতা ম্লান হতে শুরু করে, তখন আমাদের শক্তিও হ্রাস পেতে থাকে। অতএব, আমাদের শক্তি বজায় রাখতে এবং বৃদ্ধি করতে, স্বাবলম্বী হওয়া অপরিহার্য।
এই ঐতিহাসিক ভাষণ ঘিরে গোটা দিল্লি ছিল নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। প্রায় ১১ হাজার নিরাপত্তা কর্মী, ৩ হাজার ট্রাফিক পুলিশ এবং স্নাইপার মোতায়েন করা হয়েছিল লালকেল্লা ও আশেপাশের এলাকায়। অপারেশন সিন্দুরে অংশগ্রহণকারী সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের বীরত্বের জন্য বিভিন্ন পদকে সম্মানিত করা হয়, যার মধ্যে ছিল বীর চক্র, শৌর্য চক্র প্রভৃতি।
এই ভাষণ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক নতুন ভারতের আত্মপ্রকাশ—যেখানে সাহস, আত্মত্যাগ এবং উন্নয়নের স্বপ্ন একসঙ্গে জড়িয়ে আছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊