মোবাইল নয়, বই চাই: নিগমনগরের ব্যতিক্রমী পাঠাগার মন জয় করল সবার
অনুপম মোদক, নিগমনগর: আজকের যুগে যখন ছোট থেকে বড় সবাই মোবাইলে মগ্ন, তখন বইয়ের প্রতি ভালোবাসা জাগাতে কোচবিহারের দিনহাটা ১ ব্লকের নিগমনগরে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিগমনগর নিগমানন্দ সারস্বত বিদ্যালয় চত্বরে গড়ে উঠেছে এক অভিনব মুক্ত পাঠাগার, যার নাম "বই ঠাকুরানীর হাট"। এই পাঠাগারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো, এখানে বই পড়ার জন্য কোনো ফি লাগে না, তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, প্রাক্তনী সংঘ এবং এনসিসি বিভাগের মিলিত প্রচেষ্টায় এই পাঠাগারটি তৈরি হয়েছে। এর পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত ও মনোরম। একটি সুন্দর কুটিরের ভেতরে রয়েছে কয়েকশো বই দিয়ে সাজানো আলমারি এবং আরাম করে বসার জন্য বাঁশের মাচা ও কাঠের চেয়ার। কুটিরে পৌঁছানোর রাস্তাটিও মন মুগ্ধ করার মতো, যেখানে পাথরের রাস্তায় দু'পাশে ফল ও ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। যারা শহুরে জীবনের ব্যস্ততা থেকে কিছুটা দূরে শান্তিতে বই পড়তে চান, তাদের জন্য এটি এক আদর্শ স্থান।
এই পাঠাগারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি সম্পূর্ণ কর্মীবিহীন। এখানে কোনো গ্রন্থাগারিক নেই। যে কেউ যেকোনো সময় এসে নিজের পছন্দের বইটি বেছে নিয়ে পড়তে পারেন। এই উন্মুক্ত ব্যবস্থা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এখানকার এক কিশোরের কথায়, "মোবাইল ছাড়া থাকা খুব কঠিন। কিন্তু এখানে এসে যখন বই পড়ি, তখন অন্যরকম মানসিক শান্তি পাই।"
নিগমনগরের এই বিদ্যালয়টি অতীতেও মানবিক দেয়াল এবং দেওয়াল গ্রন্থাগারের মতো নানা সামাজিক ও মানবিক কাজের জন্য পরিচিতি লাভ করেছে। "বই ঠাকুরানীর হাট" সেইসব ব্যতিক্রমী উদ্যোগের একটি সাম্প্রতিক সংযোজন। মোবাইল আসক্তির এই যুগে এই ধরনের অভিনব পাঠাগার বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে এবং মানুষের মধ্যে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা জাগাতে এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊