'বিজেপি সরকার গড়লেই হবে প্রকৃত পরিবর্তন'—কলকাতায় মোদির ভাষণে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ
গত সাড়ে তিনমাসের মধ্যে এই নিয়ে তিনবার বাংলায় এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। একগুচ্ছ মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি দমদম সেন্ট্রাল জেল ময়দানে সভা করেন তিনি। আর সেই সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে শাসকদলকে আক্রমণ শানান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “তৃণমূল যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলার উন্নয়ন থমকে থাকবে।” তিনি দাবি করেন, কেন্দ্র থেকে পাঠানো অর্থ তৃণমূলের কর্মীদের দ্বারা লুট হয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে তা ব্যয় হচ্ছে না।
মোদি বলেন, “আগে ত্রিপুরা ও অসমের অবস্থাও এমনই ছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার আসার পর সেখানে গরিবদের জন্য কল্যাণ প্রকল্পের সুফল পৌঁছেছে। বাংলায়ও প্রকৃত পরিবর্তন আসবে, যদি বিজেপি সরকার গঠন হয়।”
তিনি ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর শাসনের ১৫ বছরের মূল্যায়ন করে বলেন, “আপনারা পরিবর্তনের আশায় তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখন সময় এসেছে প্রকৃত পরিবর্তনের। তৃণমূলকে সরাতে হবে।”
নারী নিরাপত্তা, কৃষক উন্নয়ন ও গরিবদের অধিকার
মোদি বলেন, “পরিবর্তন মানে নারীদের নিরাপত্তা, দোকান ও বাড়ি পোড়ানো বন্ধ, গরিবদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা এবং কৃষকদের অগ্রগতি। আমরা বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি চাই।”
‘অপারেশন সিঁদুর’ ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থান
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমাদের সেনারা এমন শিক্ষা দিয়েছে যে পাকিস্তান ঘুম হারিয়েছে। দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে। বাংলার সেনাদের অভিনন্দন।”
বাংলার উন্নয়নের রোডম্যাপ ও সাংস্কৃতিক স্বীকৃতি
তিনি বলেন, “বিজেপির কাছে বাংলার উন্নয়নের রোডম্যাপ আছে, তৃণমূলের নেই। আমরা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির স্বপ্নের বাংলা গড়ব—এটাই মোদির গ্যারান্টি।” তিনি দাবি করেন, “আমরাই বাংলা ভাষাকে ‘ক্লাসিক্যাল ভাষা’-র মর্যাদা দিয়েছি। বিজেপি সরকার গর্বের সঙ্গে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছে।”
অনুপ্রবেশকারী ও ভোটব্যাংক রাজনীতি
মোদি বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো উচিত নয় কি? কে তাড়াবে? বিজেপি তাড়াবে। তৃণমূল ভোটব্যাংকের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে। তারা চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, নাগরিকদের অধিকার হরণ করছে, মা-বোনদের মর্যাদা লঙ্ঘন করছে।”
দুর্নীতি ও আইনি জবাবদিহিতা
শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, রেশন দুর্নীতি, এবং তৃণমূলের মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়ার পরও তাঁরা পদত্যাগ করেননি। জনগণের প্রতি তাঁদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাঁরা প্রতারণা করেছেন। তাঁদের কি সরকারে থাকার অধিকার আছে?”
তিনি আরও বলেন, “আমি দেখেছি কেউ কেউ জেল থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন! এটা সংবিধানের অপমান। আমি যদি কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত হই, আমিও প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকব না। কিন্তু তৃণমূল সংসদে দুর্নীতি বিরোধী বিলের বিরোধিতা করছে।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠনের লক্ষ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ, এবং উন্নয়নহীনতার অভিযোগ তুলে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। মোদির ভাষণে উন্নয়ন, নিরাপত্তা, এবং সাংস্কৃতিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি ছিল কেন্দ্রীয় বিষয়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊