একই মহিলাকে দিয়ে বারবার ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের-আইনজীবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
উত্তরপ্রদেশে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের একাধিক মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ব্যক্তিগত শত্রুতা ও অর্থ উপার্জনের অভিযোগে লখনউয়ের একটি বিশেষ আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। অভিযুক্ত আইনজীবী এক দলিত মহিলাকে ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করাতেন এবং সেই মামলাগুলি নিজেই আদালতে লড়তেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, এই ধরনের আইনজীবীদের ওকালতির পেশা থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত, নইলে দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হবে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ইলাহাবাদ হাই কোর্টে একটি ধর্ষণ মামলার শুনানির সময় বিচারপতিরা লক্ষ্য করেন, অভিযোগকারী মহিলা একই ধরনের অভিযোগ আরও অনেকের বিরুদ্ধে করেছেন এবং প্রতিটি মামলায় আইনজীবী একই ব্যক্তি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তে উঠে আসে, ওই মহিলা ভিন্ন ভিন্ন থানায় মোট ১১টি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং সেগুলির ভিত্তিতে মোট ১৮টি মামলা রুজু হয়েছে, যেগুলি লড়ছিলেন অভিযুক্ত আইনজীবী।
পরবর্তী সময়ে ওই দলিত মহিলা স্বীকার করেন, তিনি আইনজীবীর স্ত্রীর বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। সেই সূত্রেই আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তদন্তকারীদের তিনি জানান, আইনজীবী তাঁকে ব্যবহার করতেন নিজের শত্রুদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এবং অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে। এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তকে তফসিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) আইনের আওতায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পাশাপাশি, অন্য দুটি ধারায় এক বছর ও দশ বছরের জেল এবং মোট ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বিচার ব্যবস্থার পবিত্রতা বজায় রাখতে এই ধরনের অপরাধীদের আদালত চত্বরে প্রবেশাধিকার থাকা উচিত নয়। যদি এই ধরনের অপব্যবহার চলতে থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে আস্থা হারাবেন, যা গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য বিপজ্জনক। এই রায় শুধু একটি ব্যক্তিগত অপরাধের বিচার নয়, বরং আইনি পেশার নৈতিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার বার্তা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊